বগুড়ার গাবতলীতে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বিএনপি নেত্রীর কটূক্তির ঘটনায় আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষের মামলায় জামিন নিতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন বিএনপি নেত্রী সুরাইয়া জেরিন রনি। তাকে লক্ষ্য করে যুবলীগ নেতাকর্মীরা ডিম নিক্ষেপ করেছে এবং এক মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী পুলিশ বেষ্টনীতেই তাকে চড়-থাপ্পড় দিয়েছেন। এ নিয়ে আদালত চত্বরে উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিশ উভয় পক্ষকে সরিয়ে দেয়।
এদিকে ওই নেত্রী বগুড়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন।
শুনানি শেষে আদালতের বিচারক নরেশ চন্দ্র সরকার তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সুরাইয়া জেরিন রনি বগুড়া জেলা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও গাবতলী উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান।
আদালত সূত্র জানায়, গত ২৭ মে বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় বিএনপির সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিএনপি নেত্রী সুরাইয়া জেরিন রনি আপত্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেন। রনির ওই বক্তব্যের প্রতিবাদে ২৯ মে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয় গাবতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ।
ওই কর্মসূচি পালন করতে গেলে আওয়ামী লীগে ও বিএনপি নেতাকর্মীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। ওই ঘটনায় গাবতলী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজার পাইকার বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। গত ৩১ মে দায়েরকৃত ওই মামলায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোরশেদ মিল্টন, বিএনপি নেত্রী সুরাইয়া জেরিন রনিসহ ১৩৩ জনকে আসামি করা হয়। সেই মামলাতেই রবিবার আদালতে হাজির হয়ে জামিন নিতে যান রনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার বেলা ১২টার দিকে যখন তিনি আদালতে হাজির হতে যান, সে সময় মহিলা আওয়ামী লীগের এক নেত্রী পুলিশ বেষ্টনীর মধ্যেই রনিকে চড়-থাপ্পড় দেন। এরপর জামিন নামঞ্জুরের পর আদালত থেকে তাকে প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় যুবলীগ নেতাকর্মীরা দলীয় স্লোগান দিয়ে রনিকে লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ করতে থাকে।
পুলিশের প্রিজন ভ্যান আদালত প্রাঙ্গণ ত্যাগ করলে যুবলীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীরা মুখোমুখি অবস্থান নেয়। পরে পুলিশ উভয় পক্ষকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
যোগাযোগ করা হলে আদালত পুলিশের পরিদর্শক (কোর্ট ইন্সপেক্টর) সুব্রত ব্যানার্জী জানান, উচ্চ আদালত থেকে নেওয়া অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের মেয়াদ শেষ হলে রবিবার বেলা পৌনে ১টার দিকে তিনি আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করায় বেলা আড়াইটার দিকে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, এ সময় কিছুটা উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে সদর থানা ও সদর ফাঁড়ি পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়।
নদী বন্দর/এসএফ