বাংলাদেশে আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে দিনভর আকাশজুড়ে মেঘ আর ঝুম বৃষ্টি হবে-এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু প্রকৃতি যেন এবার রাগ করেছে! ভরা বর্ষা মৌসুমেও বৃষ্টির দেখা নেই। পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের দেখা নেই নরসিংদীর মনোহরদীতে। অনাবৃষ্টির কারণে খরায় ফেটে চৌচির রোপা আমনের বীজতলা।
আগামী সপ্তাহ থেকে জমিতে রোপা আমন চাষ করার কথা থাকলেও বৃষ্টি না হওয়ায় জমি চাষ করতে পারছেন না কৃষকরা। এ কারণে কৃষকের কপাল চিন্তার ভাঁজ। সময়মতো ধান রোপণ করতে না পারলে চলতি মৌসুমে ভালো ফলন পাওয়া যাবে না।
তবে কয়েকজন কৃষক বাধ্য হয়ে সেচের পানি দিয়ে বীজতলায় আমনের চারা তৈরির চেষ্টা করলেও এখন পানির অভাবে জমি ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। রোদে মানুষসহ হাঁসফাঁস করছে পশু-পাখিও। প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। একটু শীতল ছায়া বা এক পশলা বৃষ্টির অপেক্ষায় রয়েছে উপজেলাবাসী। কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি না হলে একদিকে যেমন কৃষকের সেচ খরচ বৃদ্ধি পেয়ে ধানের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে, অন্যদিকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বীজতলা ঘুরে দেখা যায়, বৃষ্টির কারণে রোপা আমনের জন্য তৈরি বীজতলায় ধানের চারাগুলো সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে পারছে না। পানির অভাবে বীজতলা ও ফসলি জমি ফেটে চৌচির হয়ে আছে।
শুকুন্দী সুতালরীকান্দা গ্রামের কৃষক মানিক মিয়া, রফিক ও আহম্মদ আলী জানান, আষাঢ় মাস শেষ হয়ে শ্রাবণ মাস চলছে অথচ এখনো পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়নি। পানির অভাবে ধানের চারাগুলোও বড় হতে পারছে না। বীজতলায় পানি খুব দরকার। এদিকে মাঠে ধান রোপণের জন্য হাতে সপ্তাহ দুয়েক সময় আছে। এর মধ্যে যদি পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হয় তাহলে এ বছর রোপা আমন চাষ করে ভালো ফলন পাওয়া সম্ভব হবে না।
কৃষকরা আরো জানান, আগে আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে জমিতে রোপণ করা ধানের চারা বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যেত। অথচ এ বছর অনাবৃষ্টির কারণে জমিতে ধান রোপণ করা নিয়েই চিন্তিত আছি। বৃষ্টি নেই, খাল-বিল শুকিয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আয়েশা আক্তার বলেন, ‘ভরা বর্ষায় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। তবে কয়েকদিনের মধ্যে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলে চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কা থাকবে না। ’
নদী বন্দর/এসএফ