একসময়ের সোনালী আঁশ খ্যাত পাট নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর কৃষকরা। চলতি পাটের মৌসুমে পাট কাটা, পিল ও জাগ দেওয়া, পাটের আঁশ ছাড়ানো ও রোদে শুকানোসহ এখন তাদের নানা কাজে ব্যস্ত থাকার কথা। কিন্তু শ্রাবণ মাসেও বৃষ্টি না থাকায় খাল-বিল শুকিয়ে পানিশূন্য অবস্থা। ফলে কৃষকের মাঝে ব্যস্ততা নেই।
খালে-বিলে পানির অভাবে পাট কেটে জাগ (পচানো) দিতে পারছেন না তারা। দেখা গেছে, কোনো কোনো কৃষকের পাট জমিতেই শুকিয়ে কালো হয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ ও পাট অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে মোট দুই হাজার ৪১০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কৃষকরা এক হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করেন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মৌসুমের শুরুতে টানা বৃষ্টির কারণে জমিতে পাট বেড়ে উঠতে পারেনি। যতটুকু হয়েছে তাও এখন খড়ার কবলে পড়ে নষ্ট হওয়ার উপক্রম। এতে পাট চাষ করে লাভের আশা তো দূরে থাক, হালচাষের খরচও উঠবে না অনেক কৃষকের।
উপজেলার তিলাই ইউনিয়নের খোঁচাবাড়ী গ্রামের কৃষক শাহজাহান আলী বলেন, গত বছর পাটের ভালো দাম পেয়ে সেই আশায় এ বছর বর্গা নিয়ে দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে অর্ধেক পাট নষ্ট হয়েছে। খালে-বিলে পানি না থাকায় পাট জাগ দিতে পারতেছি না। খুব বিপদে আছি।
চরভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের মূছুল্লীপাড়া গ্রামের কৃষক ইউনুছ আলী ও আব্দুর রহিম মিন্টু বলেন, দুই বিঘা জমির পাট কেটে জাগ দিয়েছি। খালের পানি শুকিয়ে গেছে। বৃষ্টি না হলে পাট পচে নষ্ট হয়ে যাবে।
ওই এলাকার রিপন নামের এক কৃষক বলেন, প্রচণ্ড রোদের তাপে পাট শুকিয়ে কালো হয়ে মরে যাচ্ছে।
উপজেলা উপ-সহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা রতন মিয়া বলেন, এই উপজেলায় দীর্ঘদিন থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় খড়ার কারণে কৃষক পাট নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন। তিনি আরো বলেন, পাট দুটি পদ্ধতিতে পচানো যায়। একটি হলো ভারী বস্তুর সাহায্যে পানিতে ডুবিয়ে দেওয়া, দ্বিতীয়টি পাট ছিলে গর্ত করে সেখানে পানি দিয়ে পচানো। তবে দ্বিতীয় পদ্ধতিতে কৃষকরা অভ্যস্ত নন। তাই এখনই পাট না কেটে বৃষ্টি হলে পাট কাটার পরামর্শ দেন তিনি।
নদী বন্দর/এসএফ