রাজধানীর কলাবাগানে ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থী ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় আনুশকার চরিত্রহনন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তার মা শাহনূরে আমিন। বুধবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তিনি।
আনুশকার মা বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় আমার নিষ্পাপ মেয়েকে নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে। চরিত্রহনন করা হচ্ছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মিথ্যা প্রচারণাকারীদের সাইবার ট্রাইব্যুনালে বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
শাহনূরে আমিন দাবি করেন, তার মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ঘটনার পর আমরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। গত ৭ জানুয়ারি দিহান ও তার সঙ্গীরা আমার মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। বাসায় নিয়ে ধর্ষণ শেষে আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে।
আনুশকার মা বলেন, দিহান ফোন দিয়ে জানায়, হাসপাতালে পায়ে ধরে কান্নাকাটি করে বলে, আন্টি আমাকে বাঁচান। তখন দিহান আরও বলে, আমরা চারজনই তাকে বাসায় নিয়ে যাই। আমার মেয়ে ফাঁকা বাসায় একা যাওয়ার কথা না।
আনুশকার মা বলেন, মামলায় আমাদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। আমরা অপহরণ মামলা করতে চেয়েছি। কিন্তু পুলিশ সেটা করতে দেয়নি। উল্টো সোশ্যাল মিডিয়ায় আমার মেয়ের চরিত্রকে হনন করা হচ্ছে। সেখানে বলা হচ্ছে দিহানের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ তথ্য মোটেও সঠিক নয়। দিহানের সঙ্গে আমার মেয়ের পরিচয় ছিল না।
চার দফা দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, দ্রুত বিচার আইনে দিহান ও তার সঙ্গীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। সরকার যেন তদন্তে আমাদের সহযোগিতা করে। স্বচ্ছ ও সঠিক ডিএনএ পরীক্ষা করা হোক। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হোক। আমার নিষ্পাপ মেয়েকে বিকৃতভাবে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, আপনি একজন মা। আমি আমার মেয়েকে হত্যার স্বচ্ছ ও ন্যায়বিচার চাই।
সংবাদ সম্মেলনে মহিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, বর্তমানে অনেক শিক্ষার্থী প্রযুক্তির অপব্যবহারের শিকার হচ্ছে। প্রযুক্তির অপব্যবহারে শিশু ও কিশোরী ধর্ষণ ক্রমাগত বাড়ছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে অভিযুক্ত দিহানের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, লিগ্যাল এইড সম্পাদক শামীমা আফরোজ, ঢাকা মহানগরের আন্দোলন সম্পাদক জেবুন্নেসা, নিহত ছাত্রীর বাবা-মা প্রমুখ।
বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) সকালে ওই ছাত্রী তার বন্ধু দিহানের বাসায় যায়। সেখানে তাদের শারীরিক সম্পর্ক হয়। একপর্যায়ে রক্তক্ষরণ হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে দিহানসহ চার বন্ধু তাকে ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ছাত্রীকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আনুশকার বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এ ঘটনার মামলায় দিহান গ্রেফতার রয়েছেন। তিনি ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন।
নদী বন্দর / এমকে