বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র প্রার্থী আব্দুল কাদের মির্জা বলেছেন, ‘আমাদের এমপিরা রাতের বেলা মদ জুয়া নারী নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। পুলিশ সেখানে যায়, এদের মতো লোকদেরকে পুলিশ স্যালুট দেয়। হায়রে আমার দেশ। এরা পুলিশের ছত্রছায়ায় আর পুলিশের পাহারায় থেকে স্যালুট নিয়ে জুয়া খেলে, মদ খায়, নারী ধান্ধা করে। এসব কি চলতে দেওয়া যায়। সিদ্ধান্ত নেন, এদের আস্তানা খুঁজে এদের বিরুদ্ধে জনবিস্ফোরণ ঘটিয়ে এদের এ ধরনের অপরাধ ভবিষ্যতে যেন না করতে পারে। তা বন্ধ করে দিতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে নোয়াখালীর বসুরহাট বাজারে রূপালী চত্বরে নির্বাচনী শেষ সমাবেশে তিনি এসব কথাগুলো বলেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খান, সাধারণ সম্পাদক নুর নবী চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আজম পাশা চৌধুরী রুমেল প্রমুখ।
আবদুল কাদের মির্জা ফরিদপুরের এমপি নিক্সন চৌধুরী, কর্নেল ফারুক খান, আহমেদ হোসেন ও মাহবুবুল আলম হানিফের কট্টর সমালোচনা করে বলেন, ‘এরা আমাকে খোঁচা দেয়। খোঁচালে আমিতো বসে থাকবো না। আমি সাহস করে সত্য কথা বলি। অন্যায়, অনিয়ম, অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করি। ভোট জালিয়াতি, ভোট ডাকাতি চরম অন্যায়। অন্যায়-অনিয়মের প্রতিবাদ করলাম, আর ভোটও চুরি করলাম এগুলো কি একই আদর্শ? এসবের কাছ থেকে এদেশের মানুষ পরিত্রাণ চায়। এসবের প্রতিবাদের অংশ হিসেবেই আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘ফরিদপুরের এমপি নিক্সন চৌধুরী রাজপুত্র সেজেছেন। নিক্সন চৌধুরী গত রাতে আমার উদ্দেশে বলেন, চুনোপুঁটিদের কথা কে শোনে, শেখ হাসিনার কাছেও ঘেঁষতে পারবে না।’
মির্জা কাদের নিক্সনকে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আমি কি চুনোপুঁটি? তিনিতো আমাদের ত্যাগী নেতা জাফরউল্যাহর ভোট চুরি করে এমপি হয়েছেন।’
মির্জা কাদের এমপি নিক্সনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনার বয়স কত? আমার রাজনৈতিক বয়সও তো হবে না। গায়ের জোরে আন্ডু, গান্ডু, পান্ডুরা আপনার সাথে আছেন। এজন্যই আপনি ভোট চুরি করে এমপি হন। আমার নেত্রী শেখ হাসিনার কাছে যেতে আপনার মতো রাঘব-বোয়ালের প্রয়োজন নেই। আপনিতো নোয়াখালীর এমপি একরামুল করিম চৌধুরী আর ফেনীর এমপি নিজাম হাজারীর অনুসারী।’
এসময় তিনি আরও বলেন, ‘আমি বাংলাদেশে প্রমাণ করতে চাই, গণতন্ত্র ও অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন কাকে বলে এবং কি জিনিস। নোয়াখালী ও ফেনীর এমপি একরাম-নিজামরা এক কোটি টাকা খরচ করেছে আমাকে হারানোর জন্য। বিদেশেও আমার বিরুদ্ধে টাকা খরচ করা হচ্ছে। এগুলো জনগণের লুটপাট করা টাকা। টাকা দিচ্ছে খেয়ে ফেলুন। বিবেক দিয়ে চিন্তা করে স্বাধীনভাবে যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দেবেন। আমার বিরুদ্ধে টাকা খরচ করে লাভ হবে না। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে ডাক্তার মিলনকে বাম দলের লোকজন হত্যা করেছিল। ওই আন্দোলনকে চাঙ্গা করার জন্য আমাদের এখানে নির্বাচনের আগে এবং পরে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, অগ্নি-সংযোগ, হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। ষড়যন্ত্রকারীরা অনেক অস্ত্র পাঠিয়েছে। এসব বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।’
আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘নির্বাচনী দায়িত্বে প্রিসাইডিং পোলিং অফিসার যাদেরকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, এরা সব জামায়াত-বিএনপির লোক। মাইজদি-ফেনীর লোকদের পরামর্শে এসব হচ্ছে। নির্বাচনী দায়িত্বে যারা আছেন তারা কোনো অনিয়ম করলে কোম্পানীগঞ্জ থেকে যেতে পারবে না। অনিয়ম করলে ধরে এনে রুপালী চত্বরে লটকিয়ে ফেলবো।
তিনি আবারও সাবধান করে বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলার চেষ্টা করবেন না। প্রশাসন অদৃশ্য কারণে এখানে পাঠানো অবৈধ অস্ত্রগুলো এখনও উদ্ধার করেনি।’
নদী বন্দর / জিকে