1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
বছরে ৮ মাস নৌকায় পারাপার, একটি ব্রিজ চান এলাকাবাসী - Nadibandar.com
বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৫১ অপরাহ্ন
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২২
  • ৭৫ বার পঠিত

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নয় গ্রামের মানুষ বছরে আট মাস ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার হচ্ছে। উপজেলার আনাইতারা ইউনিয়নের আটিয়া মামুদপুর গ্রামের এলাংজানি নদীর ফুলবাইড়া ঘাটে ব্রিজ না থাকায় যুগ যুগ ধরে এলাকার মানুষকে নৌকায় পারাপার হতে হচ্ছে বলে জানা গেছে। বর্ষা মৌসুমে পোহাতে হয় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। এতে মানুষকে বাড়তি টাকা খরচ করতে হচ্ছে।

আবার সময়ও নষ্ট হচ্ছে বলে গ্রামের মানুষ জানিয়েছেন।

জনপ্রতিনিধিরা বার বার এই খেয়াঘাটে ব্রিজ নির্মাণের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। ফলে দুর্ভোগ পিছু ছাড়ছে না ওই এলাকার মানুষের।

জানা গেছে, উপজেলার আনাইতারা ইউনিয়নের আটিয়া মামুদপুর ও শুকতা গ্রামের মাঝখান দিয়ে ধলেশ্বরী শাখার এলাংজানি নদী প্রবাহিত হয়েছে। নদীর দক্ষিণপাশে এ উপজেলার আনাইতারা ইউনিয়নের চরবিলসা, তেগুরি, সন্ধিতারা, শুকতা, আটিয়া মামুদপুর (একাংশ), খাগুটিয়া, দাতপাড়া, মশাজন গ্রাম। এলাংজানি নদীর ফুলবাইড়া ঘাটে ব্রিজ নির্মাণ না হওয়ায় নয় গ্রামের শত শত শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষ বছরে আট মাস নৌকায় পারাপার হচ্ছে।  

এছাড়া পার্শ্ববর্তী নাগরপুর উপজেলার শেওয়াইল, গাজুটিয়া, কুনরা ও বাগজান গ্রামের মানুষও এই খেয়াঘাট পারাপার হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে থাকেন।  

আটিয়া মামুদপুর গ্রামে একটি উচ্চ বিদ্যালয়, একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আনাইতারা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়, ইউনিয়ন ভূমি অফিস রয়েছে। আর এই নয় গ্রামের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন কাজে প্রতিদিন মামুদপুর গ্রামে আসতে হয়।  

এছাড়া আটিয়া মামুদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকশ শিক্ষার্থী নিয়মিত খেয়া পার হয়ে যাতায়াত করে। একদিকে তাদের সময় অপচয় হয়, আবার বারতি টাকাও গুণতে হয় নিয়মিত। শুষ্ক মৌসুমে মাত্র চার মাস হেঁটে চলাচল করতে পারলেও বৃষ্টি হলে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।  
তাছাড়া ব্রিজ না তাকায় গ্রামগুলোতে উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দামও পাচ্ছেন না কৃষক। এলাকাবসীর এই দুর্ভোগ লাঘবে ওই খেয়াঘাটে একটি ব্রিজ অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

খেয়া নৌকায় প্রতিজন পারাপার হতে চার টাকা, বাইসাইকেলসহ ১০ টাকা এবং মোটরসাইকেলসহ পার হলে লাগে বিশ টাকা। এছাড়া খেয়াঘাটের নিকটবর্তী কয়েকটি গ্রামের মানুষ বাৎসরিক ধান এবং চাল দিয়েও খেয়া পারাপার হয়ে থাকেন।

মামুদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র সামিউল আহাদ জানায়, নৌকায় পারাপার হতে ভয় লাগে।  
 
মামুদপুর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল খালেক জানান, গভীর পানিতে নেমে ব্রিজের পরিমাপ করা হয়েছে। কিন্তু কী কারণে ব্রিজ নির্মাণ হচ্ছে না তা জানা নেই। শিলা বেগম জানান, নৌকায় নদী পারাপারে অনেক ভয় লাগে। আব্দুল হালিম মিয়া জানান, রাতে একজন রোগী হাসপাতালে নেয়া প্রয়োজন হলে পারাপারে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।  

শুকতা গ্রামের আব্দুল কাদের মিয়া জানান, ব্রিজ না থাকায় জমিতে উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য পাই না আমরা।  

শুকতা গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী আলামিন মিয়া বলেন, নদীর দুই পাড়ের মানুষের যোগাযোগ সহজ করতে মামুদপুর খেয়া ঘাটে একটি ব্রিজ আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি।

শুকতা গ্রামের বাসিন্দা মির্জাপুর আলহাজ শফি উদ্দিন মিঞা অ্যান্ড একাব্বর হোসেন টেকনিক্যাল কলেজের সিনিয়র প্রভাষক মাসুদুর রহমান জানান, মামুদপুর খেয়া ঘাটে একটি ব্রিজ নির্মিত হলে আমাদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের অবসান হবে।

চরবিলসা গ্রামের শিক্ষক আবদুল কাদের জানান, আটিয়া মামুদপুর খেয়া ঘাটে একটি ব্রিজ নির্মিত হবে দীর্ঘদিন ধরে এমন কথা শুনে আসছি। কিন্তু তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

আনাইতারা ইউপির চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা কামাল ময়নাল জানান, স্বাধীনতার পরবর্তী সময়েও আসাম থেকে এই নদী দিয়ে বারিন্দা হাটে কাঠভর্তি বড় বড় চালি আসতো। এখন নদী মরে গেছে। বিভিন্ন জায়গায় শুকিয়ে চর হয়েছে। তবে এলাংজানি নদীর ফুলবাইড়া ঘাটে বছরের প্রায় আট মাস পানি থাকে। নৌকা ছাড়া পারাপার হওয়া যায় না। বাকি চার মাস কোনরকম হেঁটে চলাচল করা যায়। জনসাধারণের চলাচলে এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি জানান।

মির্জাপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আটিয়া মামুদপুর খেয়াঘাটের মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। ওই স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণের প্রকল্প সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেওয়া আছে। অনুমোদন হলেই পরবর্তী কার্যক্রম শুরু হবে বলে তিনি জানান।

নদী বন্দর/এসএইচ

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com