বৃষ্টিপাতে রাজধানীসহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সৃষ্ট ‘জলাবদ্ধতা’ সরকারের মেগা-উন্নয়নের ফল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ মঙ্গলবার সকালে মতিঝিলে দৈনিক নয়া দিগন্তের কার্যালয়ে পত্রিকাটির ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ঢাকা মহাসড়কের গাজীপুর অংশে বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় রাজধানীর খিলক্ষেত, উত্তরা-বিমানবন্দর এলাকায় দেখা দিয়েছে যানজট। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া উত্তরা যাওয়ার পথ ব্যবহার না করার অনুরোধ জানিয়েছে।
এ বিষয়ে ফখরুল বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে এখানে এসেছি। আপনারা জানেন, আজকে উত্তরার রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। ডিএমপি কমিশনার একটা সার্কুলার দিয়েছেন এই সড়কটা ব্যবহার না করার জন্য। গতকাল ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ফলে যে বৃষ্টিপাত হয়েছে, তাতে এয়ারপোর্ট থেকে গাজীপুর পর্যন্ত এই রাস্তা আর চলাচলের উপযোগী নয়। আমি বেশ কিছুদিন ধরে এই রাস্তাটার কথা বলে আসছি। ‘
উত্তরার বাসায় কিভাবে যাবেন তা নিয়ে নিজের দুশ্চিন্তার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি জানি না, আমি এখন বাসায় ফিরব কী করে! ধরে নিচ্ছি, অন্য বিকল্প রাস্তা বের করে ফিরতে হবে। এই যে মেগাপ্রজেক্ট, মেগা-উন্নয়ন, তার ফলশ্রুতিতে আজকের এই অবস্থা। কথাটা এ জন্য বললাম যে আজকের এই (জলাবদ্ধতা) অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তাদের এই মেগা-উন্নয়নের কারণেই। ’
সংবিধানের কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা খুব পরিষ্কারভাবে বলেছি, আমরা সাংবিধানিক কমিশন তৈরি করব। যদি আমরা জনগণের ম্যান্ডেটে বিজয় অর্জন করতে পারি, সাংবিধানিক কমিশন তৈরি করে আমরা সেই অগণতান্ত্রিক, জনগণবিরোধী যেসব বিষয় সংযোজন করা হয়েছে সেগুলো বাতিল করব। ‘
তিনি আরো বলেন, ‘জনগণের জন্য যেটা প্রয়োজন, ১৯৭২ সালে যেটা করা হয়েছিল তার আশপাশে নিয়ে সত্যিকার অর্থেই একটা যুগোপযোগী সংবিধান আমরা নিয়ে আসার চেষ্টা করব। ‘
ফখরুল বলেন, ‘এ দেশের মানুষ যা চাইবে সেটাই হচ্ছে সংবিধান এবং সেই সংবিধান আমি মনে করি, বর্তমান যে সংবিধান আছে তা মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ‘
সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনাদের কাছে অনুরোধ জানাব, বাংলাদেশকে যেন আমরা সত্যিকার অর্থেই একটা অত্যন্ত প্রগতিশীল জনপদ হিসেবে তৈরি করতে পারি, আমরা যেন বাংলাদেশে মুক্তচিন্তার সৃষ্টি করতে পারি, আমরা যেন সত্যিকার অর্থেই একটা সাম্য, ন্যায়বিচার এবং মানবিক মূল্যবোধের কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে পরিণত করতে পারি, সে জন্য আপনারা অতীতে যে ভূমিকা রেখেছেন তা অব্যাহত রাখবেন। আপনারা জনগণের পাশে দাঁড়াবেন এই বিশ্বাস আমার আছে। ‘
অনুষ্ঠানে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ইকতেদার আহমেদ, ব্যারিস্টার মইনুল ইসলাম, নয়া দিগন্তের ব্যারিস্টার শিব্বির মাহমুদ, আলমগীর মহিউদ্দিন, সালাউদ্দিন বাবর, মাসুম খলিলী, বিএনপির খায়রুল কবির খোকন উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, জহির উদ্দিন স্বপন, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, আতিকুর রহমান রুমন, শায়রুল কবির খান, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বর্তমান সভাপতি এম আবদুল্লাহ, মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম প্রমুখ নেতা উপস্থিত ছিলেন।
নদী বন্দর/এসএইচ