সারা পৃথিবীতে দুর্যোগ দেখা দিয়েছে, সেই প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। কিন্তু বিএনপি দুর্যোগ লাঘবে এগিয়ে না এসে উল্টো বিভিন্ন জায়গায় সমস্যা সৃষ্টি করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ অভিযোগ করেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনাকালীন ও বন্যার সময় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি। তারা শুধু বড় বড় কথা বলতে পারে। এখন একটা দুর্যোগ পুরো পৃথিবীতে চলছে, বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়েছে। বিএনপি-জামায়াতের নেতারা দুর্যোগ লাঘব করবে কী, তারা বিভিন্ন জায়গায় সমস্যা সৃষ্টি করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, জনগণ ভালো করে জানে কারা জনগণের প্রকৃত বন্ধু, কারা দেশ স্বাধীন করেছে, কারা দেশের উন্নয়ন করছে। তাই জনগণকে ধোঁকা দেওয়ার সুযোগ নেই। দেশের উন্নয়ন চলমান রাখতে আগামীতে নৌকায় ভোট দিতে হবে। বিএনপি-জামায়াতের চক্রান্তের জালে মানুষ আর কোনো দিন পা দেবে না।
মন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারি এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে দ্রব্যমূল্যের দাম অসহনীয় পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে। দ্রব্যমূল্যের দাম শুধুমাত্র আমাদের দেশেই বাড়েনি, বেড়েছে সারা বিশ্বে; যার প্রভাব পড়েছে আমাদের কৃষি, যোগাযোগসহ বিভিন্ন খাতে।
অনুষ্ঠানে ১৭৪২ জনের মাঝে টিসিবির পণ্য বিতরণ ও ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে উপকারভোগী পরিবারের মধ্যে টিসিবির পণ্য বিক্রয় কার্যক্রমের এবং গ্রামীণ অ্যাম্বুলেন্স উদ্বোধন করেন জাহিদ মালেক।
এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে ডেঙ্গি রোগ নতুন নয়। গত বছরও ডেঙ্গি ছিল, তার আগের বছর আরও বেশি ছিল। এ বছর একটু বেশি দেখা দিয়েছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো এশিয়াতে- থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া- সব দেশে অনেক বেড়েছে। বাংলাদেশ থেকে ওই সব দেশে ডেঙ্গি রোগ অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে এক হাজার ডেঙ্গি রোগী ভর্তি হয়েছে। এদের চিকিৎসার কোনো ঘাটতি হয়নি। তারপর দুইশর মতো ডেঙ্গি রোগী মারা গেছেন। আগামীতে বৃষ্টি না হলে দেশে ডেঙ্গি রোগ কমে যাবে। এ সময় মন্ত্রী সবাইকে নিজেদের বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন রাখার আহ্বান জানান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, একটি অ্যাম্বুলেন্স রোগীর জীবন বাঁচাতে অনেক ভূমিকা রাখে। সঠিক সময়ে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে রোগীর মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক কমে যায়। গড়পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব অর্থায়নে সাড়ে সাত লাখ টাকা ব্যয়ে গ্রামীণ অ্যাম্বুলেন্স একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এই অ্যাম্বুলেন্সটি গ্রামের সব রাস্তা দিয়ে চলতে পারবে। এ ধরনের অ্যাম্বুলেন্সের উদ্যোগ প্রতিটি ইউনিয়নে নিলে স্বাস্থ্যসেবার মান আরও বৃদ্ধি পাবে। এ উদ্যোগ সফল হলে সারা দেশে এ ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।
জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন- জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, সিভিল সার্জন ডা. মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমতিয়াজ মাহবুব, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইসরাফিল হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতিশ্বর পাল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফসার উদ্দিন সরকার প্রমুখ।
নদী বন্দর/এসএম