জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু বলেছেন, যৌন হয়রানি প্রতিরোধে প্রশাসন, আইন ও বিচার ব্যবস্থা সচল থাকা সত্ত্বেও সমাজের বিভিন্ন স্তরে যৌন হয়রানি লক্ষ করা যায়। এই ব্যাধি প্রতিরোধে প্রশাসনিক, সামাজিক ও বিচারিক কার্যক্রম আরো নিশ্ছিদ্র হতে হবে। শুধু আইনের মাধ্যমে এ ধরনের অপরাধ সমাজ থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে না। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ও বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সংবেদনশীল হতে হবে।
আজ মঙ্গলবার পার্লামেন্ট মেম্বারস ক্লাব মিলনায়তনে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম আয়োজিত মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
‘প্রস্তাবিত যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন-২০২২’ নিয়ে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সহসভাপতি শাহিন আক্তার ডলি। ফোরামের সাধারণ সম্পাদক নাসিমা আক্তার জলি উত্থাপিত খসড়া আইনের ওপর আলোচনায় অংশ নেন সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা ও আদিবা আনজুম মিতা, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান, ব্র্যাকের নবনীতা চৌধুরী প্রমুখ।
সভায় ডেপুটি স্পিকার বলেন, ‘যৌন হয়রানির মামলায় সাধারণত সাক্ষী পাওয়া যায় না। তাই আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য সব ধরনের প্রতিবন্ধকতাকে বিবেচনায় নিয়ে খসড়া প্রস্তুত করতে হবে। পূর্ণাঙ্গ এবং যুগোপযোগী একটি আইন তৈরিতে সবার মতামত গ্রহণ করে বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে খসড়া চূড়ান্ত করতে হবে। ’
সভায় বক্তারা বলেন, সরকারি-বেসরকারি চাকরি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব জায়গায় এখন নারীরা কর্মরত। পাশাপাশি নানা ধরনের সমস্যায়ও পড়ছেন তারা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য যৌন হয়রানি। শারীরিক, মানসিক, মৌখিকসহ বিভিন্নভাবে নারীরা যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। দিনে দিনে এর মাত্রা বেড়েই চলেছে এবং বর্তমানে তা এক ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। এই হয়রানি বন্ধে প্রস্তাবিত বিলটি সংসদে উত্থাপন ও তা পাসের আহ্বান জানান তারা।
আরো বলা হয়, প্রস্তাবিত আইনটির উদ্দেশ্য হলো কর্মস্থল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেকোনো ধরনের হয়রানিমুক্ত নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করা, যাতে নারী-পুরুষ সবাই সম্মানের সাথে কাজ করতে পারে এবং সুষ্ঠু পরিবেশে জ্ঞানার্জন ও কর্ম সম্পাদন করতে পারে। বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে যৌন হয়রানিমূলক কিছু কর্মকাণ্ড ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
‘প্রকৃতপক্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে এ ধরনের অপরাধ দমনে কার্যকর ফল আসছে না’ জানিয়ে বক্তারা বলেন, কেননা দণ্ডবিধির প্রচলিত শাস্তি অপেক্ষা কর্মক্ষেত্রে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলাভঙ্গজনিত প্রশাসনিক শাস্তি এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা অধিক গ্রহণযোগ্য। যে কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি রোধের জন্য পৃথক ও স্বতন্ত্র আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন।
নদী বন্দর/এসএইচ