কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে দিনাজপুরে বোরো ধানের উপকার হলেও টমেটো ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। রোববার (১৯ মার্চ) দিনগত গভীর রাত থেকে সোমবার (২০ মার্চ) সকাল পর্যন্ত হওয়া বৃষ্টিতে টমেটোর ক্ষেতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।
সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষকরা কেউ থালা, গামলা ও বালতি দিয়ে ছেঁকে আবার কেউ শ্যালো মেশিন দিয়ে টমেটো ক্ষেতের পানি শুকানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছেন। এতে জেলার ১৩ উপজেলায় কৃষকদের চাষ করা এক হাজার ১৪২ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটোসহ সবজি, খিরা, বাঙ্গি, কাঁচা মরিচের ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জেলার সদর উপজেলার ‘টমেটোর রাজধানী’ খ্যাত ৪ নম্বর শেখপুরা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, টমেটো ক্ষেতে পানি জমে আছে। কৃষকরা ক্ষেত থেকে পানি অপসারণের চেষ্টা করছেন।
সদর উপজেলার কৃষাণ বাজার গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম ও বাবুল চন্দ্র রায় বলেন, ‘টমেটোর অবস্থা খারাপ। ফির যদি রাইতত পারি হয় তাইলে মাডার হই যাবি ( আবার যদি রাতে পানি হয় তাহলে সব শেষ হয়ে যাবে)।’
একই গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, তিনি দেড় বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করেছেন। আর মাত্র ১৫ দিন পরেই টমেটো বিক্রির উপযুক্ত হয়ে যেতো। কিন্তু ক্ষেতে যে পরিমাণ বৃষ্টির পানি জমেছে তাতে টমেটো গাছগুলো পচে যাবে। এতে ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যাবে।
শ্যালো মেশিন দিয়ে টমেটো ক্ষেত থেকে পানি অপসারণ করছিলেন কৃষক কৃষ্ণ চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, ‘ভগবান জানে টমেটো গাছ বাঁচবে কি না? আপ্রাণ চেষ্টা করে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি শুকিয়েছি। এখন হাতে গামলা নিয়ে বাকি পানি শুকানোর চেষ্টা করছি। অনেক খরচ হয়ে গেছে। যদি শেষ রক্ষা হয়।’
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নুরুজ্জামান বলেন, জেলার ১৩ উপজেলায় এক হাজার ১৪২ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ হয়েছে। তবে বৃষ্টি টমেটোর ক্ষতির কারণ হতে পারে। বৃষ্টি যদি স্থায়ী না হয় তাহলে ক্ষতির পরিমাণ অনেক কম হবে। তবে এখনো তেমন ক্ষতির আশঙ্কা নেই।
তিনি আরও বলেন, বৃষ্টিতে বোরো ধানের উপকার হয়েছে। এতে সেচ কম লাগবে। তবে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে তাতে খিরা, বাঙ্গি, কাঁচা মরিচের তেমন ক্ষতির আশঙ্কা নেই বললেই চালে। দিনাজপুরে এ ফসলগুলো তুলনামূলক কম এবং মৌসুমের শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া সহকারী আসাদুজ্জামান বলেন, রোববার রাত থেকে সোমবার ভোর ৬টা পর্যন্ত দিনাজপুরে ২৯ দশমিক ৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
নদী বন্দর/এসআরকে