ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেছেন, অনেকে নিজেদেরকে সংখ্যালঘু ভাবেন। এ শব্দটা মুছে ফেলতে হবে। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবার রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে। আমরা সবাই বাংলাদেশি এবং আমরা বাঙালি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ। আমাদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ আসতে পারে না। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে থাকতে চাই, বাঙালি হিসেবে থাকতে চাই।
বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে গাজীপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতামূলক আন্তঃধর্মীয় সংলাপ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, এই দেশে বসবাসের জন্য সবার সম-অধিকার রয়েছে। এ অধিকার আদায়ে আমরা সচেষ্ট থাকব। বাঙালি হিসেবেই আমরা যার যার অধিকার নিয়ে বসবাস করতে চাই। এটাই হলো আমাদের থিওরি।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, সবাইকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে দায়িত্বশীল হতে হবে। স্ট্যাটাস দেওয়ার সময় অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। এমন কোনো স্ট্যাটাস দেওয়া যাবে না যাতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে কোনো ধরনের আঘাত আসে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশে পা দিয়েছে। ২০৪১ সালে এটা উন্নত দেশের সঙ্গে শামিল হবে। এ ব্যাপারে অনেকের ধারণা অস্পষ্ট। অনেকে মনে করেন কীভাবে এটা সম্ভব যে আমেরিকা, রাশিয়া, সুইজারল্যান্ডের মতো এ দেশ হবে। আসলেই এটা সম্ভব। আমাদের ১০টি মেগা প্রকল্প রয়েছে। আজকে এক পদ্মা সেতু থেকে আমাদের যে ইনকাম হচ্ছে, এতে বছরে যে অঙ্ক দাঁড়ায় একসময় আমাদের দেশের বাজেটও এত টাকা ছিল না। এবার চালু হয়েছে মেট্রোরেল। ঠিক তেমনি চট্টগ্রামের কর্ণফুলি টানেলটি যখন চালু হবে তখন চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মধ্যে দূরত্ব কমে যাবে প্রায় অর্ধেক।
এতে খরচ অর্ধেক কমে যাবে। সময়ও লাগবে অর্ধেক। বাকি অর্ধেক সময় মানুষ অন্যকাজে লাগাতে পারবে। আরও ৭টি মেগা প্রকল্প যখন হয়ে যাবে তখন আমাদের জিডিপির হার বেড়ে যাবে বর্তমান সময়ের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ।
মন্ত্রী বলেন, দেশ যখনই এগিয়ে যায় তখনই এক শ্রেণির মানুষ ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চেষ্টা করে। রাজনীতিতে ধর্ম ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। এজন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গাজীপুর জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান। সংলাপে স্বাগত বক্তব্য দেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আবদুল্লাহ আল শাহীন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এম এ বারী, গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ এবিএম ইসমাইল হোসেন মিয়া, অধ্যক্ষ মুকুল কুমার মল্লিক, শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম, কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম গোলাম মোরশেদ খান, কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ, গাজীপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোরাদ আলী, গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব, ভাওয়াল মির্জাপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. আবুল হোসেন, গাজীপুর জেলা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মুফতি কামরুল ইসলাম নোমানী, গাজীপুর বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদের খতিব মো. আকতার হোসেন প্রমুখ।
নদী বন্দর/এসআরকে