বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ কোনো আধুনিক রাজনৈতিক দল নয়, এটি সন্ত্রাসীদের আখড়া। এরা সব সময় রক্ত তৃষ্ণায় কাতর থাকে। এই দলটি দেশকে হত্যা, দখল, হাঙ্গামা, রক্তারক্তি ও খুনোখুনিতে ভরিয়ে দিতে চাচ্ছে। এই দলটির পরতে পরতে জড়িয়ে আছে মানবাত্মার অবমাননার বিভিন্ন দিক।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
গত শনিবার দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনকালে রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সমাবেশে অংশগ্রহণের আগে রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ামের বাসভবনে আওয়ামী ছাত্রলীগ-যুবলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা পুলিশের সামনেই হামলা চালায়। পুলিশ দিনভর আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ামের বাসভবনে গুলিবর্ষণ ও লাঠিচার্জ করে।
পরবর্তীতে সভাস্থলে যাওয়ার সময় পুলিশ নেতাকর্মীদের ওপর টিয়ারগ্যাস ও গুলিবর্ষণ ছাড়াও বেপরোয়া লাঠিচার্জ করে। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বহু নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে। পরে ১৭ জন নেতাকর্মীকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। মহিলা দলনেত্রী ও রাজবাড়ী পৌরসভার কাউন্সিলর ফারজানা ইয়াসমিন ডেইজিকে ১ নম্বর আসামি করে রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আফসার আলী সরদার, জেলা যুবদল সভাপতি খায়রুল আনাম বকুল, যুবদল নেতা অ্যাডভোকেট নেকবর হোসেন মনি, কাউসার আহমেদ, জেলা ছাত্রদল নেতা নুরুল ইসলাম ও ইদ্রিস আলী শেখসহ ৪১ জনকে আসামি এবং অজ্ঞাত ১২০ জনকে আসামি করে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশব্যাপী পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দিয়ে দোর্দণ্ড প্রতাপ শুরু করেছে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী। দেশে এখন জবাবদিহিতাহীন নির্মম দুঃশাসন বিরাজমান বলেই সন্ত্রাসীদের বেপরোয়া বিস্তারলাভ ঘটেছে। তাদের সৃষ্ট অবসন্ন গণতন্ত্রে মানুষকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। দেশে ন্যায়বিচার মহাশূন্যে বিলীন হয়ে গেছে। বিচারহীনতার কারণেই সন্ত্রাসীরা বেআইনি কাজ করতে উৎসাহিত হচ্ছে। এরা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়া দূরে থাকুক বরং ইতিহাসের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে জনগণের ওপর রক্তাক্ত আগ্রাসনের পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, গত শনিবার দলীয় কর্মসূচি পালনকালে আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ামের বাসভবনে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা, গুলিবর্ষণ, লাঠিচার্জ ও নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের মাধ্যমে যে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে তা সরকারের বর্বরতম পরিকল্পনারই অংশ। আমি এই বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতিদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আহ্বানসহ গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি করছি।
নদী বন্দর/এসএস