ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় নামছে পাহাড়ি ঢল। সুনামগঞ্জেও চলছে ভারী বর্ষণ। ফলে বাড়ছে সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি। বানের জলে ভাসছে জেলার নিম্নাঞ্চলে।
বানের পানি হু হু করে ঢুকছে খাল বিল হাওড়ে। গত বৃহস্পতিবার থেকে হঠাৎ করে পাহাড়ি ঢল নামতে শুরু করে। দীর্ঘ দাবদাহের কারণে হাওড়গুলোতে পানি শূন্য থাকায় এতো দিন বন্যার তেমন শঙ্কা না থাকলেও এখন জেলার টাঙ্গুয়ার হাওড়, মাটিয়ান হাওড়সহ সব হাওড়ে পানিতে টইটম্বুর। এভাবে দুই-এক দিন পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যার কবলে পড়বে সুনামগঞ্জের মানুষ।
বাহাদুরপুর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ফিরোজ আলী বলেন, পানি আয় না আয় না (পানি আসে না), এখন দেখা যায় দুই দিনে পানির জায়গা হয় না, গরু বাচুর এখন বান্দা (আটকা) পড়েছে। পানি আইলে আমাদের ক্ষতি, কালকে থেকে আজকে বহুত পানি বাড়ছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, সুনামগঞ্জে নদীর পানি বেড়ে আজ বুধবার (২১ জুন ) সুরমা নদীর ছাতক পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯০ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হয় পানি। এছাড়া, সুরমা নদীর পানি বেড়েছে সুনামগঞ্জে পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টেও। গত ২৪ ঘন্টায় সুনামগঞ্জে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৭৫ মিলিমিটার।
পৌরশহরের স্থানীয় বাসিন্দা ইয়াসিন হোসেন বলেন, পাহাড়ি ঢল নামছে। এখন অনেক জায়গায় মানুষের ঘর বাড়ির সামনে পানি চলে এসেছে। অনেক রাস্তা-ঘাটে পানিতে উঠে গেছে।
নদীর তীরের আরেকজন বাসিন্দা সৈয়দ আতাউর রহমান বলেন, সুরমা নদীর অবস্থা ভালো না। যেভাবে পানি আসছে এমন থাকলে আমাদের ঘর বাড়ি ঠিক থাকবে না। গরু বাচুর রাখার জায়গা নাই, গরু বাছুর পানিতে মারা যাইবো, গত বছর বন্যার অনেক গরু মারা গেছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাতের মাত্রাটা বর্তমানে বেড়ে গেছে, এভাবে যদি আগামী সাত দিন হয় তাহলে সুনামগঞ্জে নদীর পানির লেভেল আরও বেড়ে বন্যা হতে পারে। আজ ছাতক পয়েন্ট দিয়ে বিপৎসীমার ৯০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
গতবারের ভয়াবহ বন্যার আতঙ্ক এখনও কাটেনি হাওড়ঞ্চলের মানুষের। তার মধ্যে আবার নতুন করে বন্যার আভাস। তবে জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
নদী বন্দর/এসএস