জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ১০০ ভাগ কর্তৃত্ব। বর্তমান মন্ত্রিসভা এবং সংসদ সম্পূর্ণ পরিবর্তন হলেও হবে না। জাতীয় পার্টি অংশ নেবে কিনা, তা প্রস্তাব পাওয়ার পর ভাববে। দলে কিছু লোক আছেন তো, যারা মন্ত্রী হতে চান। তবে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ গেলে, তাকে বহিষ্কার করা হবে।’
গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। শনিবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছে।
জিএম কাদের বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের আদর্শ পরিবেশ আওয়ামী লীগ কখনই তৈরি করতে দেবে না। সেই পরিবেশ তৈরি হলে, আওয়ামী লীগ নির্বাচনেই যাবে না। যদি আদর্শ পরিস্থিতিতে নির্বাচন হয়, তাহলে এমনিতেই সরকারের পতন হয়ে যাবে। অর্থনীতির প্রভাব লাগবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, দেশ বাকশালি কায়দায় চলছে। বাকশাল আইনের মাধ্যমে হয়েছিল। সবাইকে বাকশালের সদস্য করা হয়েছিল আইনগতভাবে। এখন আইনি কাঠামো না দিয়ে, নিজস্ব কায়দায় বাকশাল করা হয়েছে। আমি যা শুনেছি, আজকাল সেনাবাহিনীতে পর্যন্ত জিজ্ঞাসা করা হয়, ‘তুমি আওয়ামী লীগের লোক কিনা?’ আওয়ামী লীগ না হলে এখন আর ব্যবসা দেয়া হয় না, চাকরি দেয়া হয় না। এর বাইরে একটি বিভাজন তৈরি করা হয়েছে, স্বাধীনতার পক্ষে এবং বিপক্ষে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের বলেন, রওশন এরশাদ শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ। কিছুই নিজে করতে পারেন না। তিনি আমাকে বারবার বলেছেন, ‘দল ভাঙব না’। তারপরও রওশন এরশাদকে দিয়ে নানা চিঠিপত্র সই করাচ্ছে কিছু লোক। আমাদের সন্দেহ, এটা সরকার করাচ্ছে। সরকার জাতীয় পার্টিকে দুর্বল করে রাখতে চায়। যেন বিরোধিতা করতে না পারি। আসলে আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য হলো, বাংলাদেশে আর কোনো দল থাকবে না। বিএনপিকে শেষ করবে। জাতীয় পার্টিকেও শেষ করবে। অনেকটা বাকশাল প্যাটার্ন।
রওশন এরশাদের সঙ্গে সমঝোতা নিয়ে জিএম কাদের বলেন, আমি নিজেই সমঝোতা করেছিলাম। ওরা (সরকারি সংস্থা) বলল, ‘স্যার আমরা নিয়ে যাই’। ওরা কৃতিত্ব নিতে চেয়েছিল। কিছু লোক পয়সার লোভে, মনোনয়ন বাণিজ্যের জন্য রওশন এরশাদকে দিয়ে বিভেদ তৈরি করছে। কিছুটা সরকার মদদ দিচ্ছে।
এই সরকার সুযোগ পেলে কোনো দল রাখবে না। ইতোমধ্যে অনেক দলকে হজম করে ফেলেছে। বিএনপি ও জাতীয় পার্টি টিকে আছে। জাতীয় পার্টি দুর্বল, তাই আগে শেষ করতে চেষ্টা করবে। তারপর বিএনপিকে শেষ করার চেষ্টা করবে। শেষ পর্যন্ত এক দল এবং এক নেতা থাকবে। তিনি আজীবন ক্ষমতায় থাকবেন বলেও মন্তব্য করেন জিএম কাদের।
নদী বন্দর/এসএস