1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
ড্রাগন চাষে ভাগ্য ঘুরেছে প্রবাসফেরত মিল্টন চাকমার - Nadibandar.com
বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১০:০৮ পূর্বাহ্ন
নদী বন্দর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৩০ জুলাই, ২০২৩
  • ৫৬ বার পঠিত

রাঙামাটি শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে সাপছড়ি ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের মধ্যপাড়ার বাসিন্দা রাহুল চাকমা মিল্টন। পড়ালেখার পাট চুকিয়ে ভাগ্য বদলের জন্য পাড়ি জমিয়েছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ায়। আট বছর প্রবাসে থেকেও ভাগ্যের চাকা ঘোরেনি তার। অবশেষে দেশে ফিরে নিজের পাহাড়ে গড়ে তুলেছেন ড্রাগন ফলের বিশাল বাগান। দুই একর জায়গা জুড়ে ৭শ পিলারে রোপণ করেছেন প্রায় ৪ হাজার ড্রাগন চারা। বছর ঘুরতেই তার ভাগ্যের চাকাও ঘুরে গেছে। ড্রাগন চাষের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন রাহুল চাকমা মিল্টন।
 
ড্রাগন ফল যা পিতায়া নামেও পরিচিত। এটি এক ধরনের ফণিমনসা ক্যকটাস প্রজাতির ফল। চীনে এটি আগুনে ড্রাগন ফল এবং ড্রাগন মুক্তার ফল, ভিয়েতনামে মিষ্টি ড্রাগন, ইন্দোনেশিয়া ও মালেশিয়াতে ড্রাগন ফল, ও থাইল্যান্ডে এটি ড্রাগন স্ফটিক নামেও পরিচিত। আমাদের দেশীয় ভাষায় অনেকে এটিকে স্ট্রবেরি নাশপাতিও বলে। এই ফলটি একাধিক রঙের হয়ে থাকে তবে লাল রঙের ড্রাগন ফল বেশি দেখা যায়। বছরে সাতবার ফলন দেয় এই গাছ।

মিল্টন চাকমা এই ফল চাষ করে এখন শত শত বেকার যুবকের অনুপ্রেরণা। তার বাগানে হাতে কলমে শিখতে এবং বাগান দেখতে ছুটে আসছেন কৃষি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও বেকার যুবকরা।

রাঙামাটি কৃষি প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটের ৫ম পর্বের শিক্ষার্থী জুপিটার চাকমা বলেন, আমার কয়েকজন শিক্ষার্থী এই ড্রাগন বাগান পরিদর্শনে এসেছি। কিভাবে চাষ করতে হয়, কিভাবে পরিচর্যা করতে হয় এসব বিষয়ে হাতেকলমে প্রশিক্ষণ নিচ্ছি। ড্রাগন চাষ আমার খুবই ভালো লেগেছে। আমিও একটি বাগান করব।

dhakapost

আরেক শিক্ষার্থী সজল চাকমা বলেন, মিল্টন দাদার ড্রাগন বাগানের কথা এখন পুরো রাঙামাটিতে ছড়িয়ে পড়েছে। আমি প্রায় সময় উনার বাগানে এসে ড্রাগন চাষ সম্পর্কে বিস্তারিত শেখার চেষ্টা করি যাতে ভবিষ্যতে আমরা কৃষকদের ড্রাগন চাষে উদ্বুদ্ধ করতে পারি এবং পরামর্শ দিতে পারি।
 
স্থানীয় বাসিন্দা আল-আমিন বলেন, আমি এই নিয়ে তিনবার মিল্টন দাদার বাগানে আসলাম। আমি উনার কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছি এবং শিখছি কিভাবে একটি ড্রাগন বাগান করা যায়। কারণ আমি নিজেও একজন উদ্যেক্তা হতে চাই।
 
নিজের ড্রাগন বাগান সম্পর্কে বলতে গিয়ে উদ্যেক্তা রাহুল চাকমা মিল্টন বলেন, আমি ২০১৮ সাথে বিদেশ থেকে আসার পর ২০২২ সালের শুরুর দিকে ড্রাগন চাষ শুরু করি। প্রথম দিকে আমি যে চারাগুলো রোপণ করি, রোপণের ৭ মাস পর সেগুলোতে ফল আসে। বর্তমানে আমার বাগানে ৭০০ পিলারে প্রায় সাড়ে চার হাজারের মত গাছ আছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে খুচরা বাজারে ড্রাগন ফল ৩০০-৩৫০/- টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। তবে সবাই যেভাবে ড্রাগন চাষের দিকে ঝুঁকছে তাতে দাম আরও কমে যাবে। চাষ শুরু করার পর থেকে এখন পর্যন্ত আমি তিনবার ফসল সংগ্রহ করেছি এতে আমার প্রায় দুই লাখ টাকার মতো আয় হয়েছে। ড্রাগন চাষের মাধ্যমে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাই আমার লক্ষ্য।
 
রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মশিউর রাহমান বলেন, পাহাড়ের জমি ড্রাগন ফল চাষে উপযোগী এবং পার্বত্যাঞ্চলের মাটিতে এর ফলনও ভালো হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকেও নিয়মিত মিল্টনকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। উনিও আমাদের সাথে যোগাযোগ রাখে এবং আমরাও উনাকে টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছি।
 
তিনি আরো বলেন, ভবিষ্যতে এখানে আরও বাগান সম্প্রসারণের ব্যাপারে উনার সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে উনার বাগানে সাইট্রাস প্রকল্পের লেবু ও মাল্টা চাষ শুরু করেছি। পাশাপাশি আরও নতুন বাগানের সৃজনের ব্যাপারে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
 
ড্রাগন চাষে রাঙামাটির অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি আর্থিকভাবেও স্বাবলম্বী হচ্ছে এখানকার মানুষ। বাজারে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় গোলাপী ড্রাগন। গোলাপী ড্রাগনের পাশাপাশি মিল্টন চাকমার বাগানে রয়েছে সাদা ড্রাগন, হলুদ ড্রাগন ও লাল ড্রাগন। এই ফল যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিকরও।

নদী বন্দর/এসএইচবি

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com