মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সঠিক চিকিৎসা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একইসঙ্গে তার বিচার প্রক্রিয়া নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন।
বুধবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ে জেলা বিএনপির আয়োজনে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির জন্য দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেন ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিব বলে, ‘দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রাজনৈতিক ব্যাপারে আমি কিছু বলতে চাই না। তবে তিনি যে প্রখ্যাত আলেম ছিলেন, তিনি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ছিলেন এবং তার পাণ্ডিত্যের কোনো সীমা ছিল না। তার চিকিৎসার সুব্যবস্থা হয়েছে বলে আমরা পত্র-পত্রিকায় দেখতে পাচ্ছি না। তাকে যে মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে, তা পুরোপুরি ন্যায়সঙ্গত হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। কারণ এ সম্পর্কে দেশে-বিদেশে অনেক প্রশ্ন আছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী এ বিচার হয়নি।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া অনেক অসুস্থ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রীকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসা প্রদান না করলে দেশের মানুষ আর আপনাদের ক্ষমতায় থাকতে দেবে না।’
তিনি বলেন, ‘এদেশের মানুষ জেগে উঠেছে। জেলা মহাসমাবেশগুলোতে তারা পরিষ্কার বলে দিয়েছে, আপনারা আর ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। আর একতরফা নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না। এদেশের মানুষ তা আর করতে দেবে না। শুধু আমরা নই, আন্তর্জাতিক মহল বলছে, অতীতের নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু হয়নি। এবারের নির্বাচন যদি সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু, অবাধ না হয় তাহলে সেই নির্বাচন আমরা গ্রহণ করবো না।’
শেখ মুজিবুর রহমানকে সরকারের লোকজনই হত্যা করেছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জিয়াউর রহমান নাকি শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার সঙ্গে জড়িত! আসলে তো এই মহান নেতাকে হত্যা করে তার রক্তের ওপর দিয়ে সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা খন্দকার মোশতাকের নেতৃত্বে শপথ নিয়েছেন ১৯৭৯ সালে।
সেদিন এই সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনীর সদস্যরা খন্দকার মোশতাককে স্যালুট দিয়ে আনুগত্য ঘোষণা করেন। যারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের আপনারা মন্ত্রী-এমপি বানিয়েছেন। সুতরাং এই মিথ্যা কথাগুলো বলে দৃষ্টি অন্যদিকে নেবেন না। কারণ তখন বিএনপি তৈরি হয়নি। জিয়াউর রহমান তখন ডেপুটি চিফ ছিলেন। তার কোনো নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না।’
নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে এ সরকারকে হঠাতে না পারলে বিএনপিকে কচুকাটা করা হবে। তাই দলের নেতাকর্মীদের আরও সক্রিয় আন্দোলনের জন্য আহ্বান মির্জা ফখরুল।
এসময় ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তৈইমুর রহমান, সহ-সভাপতি পয়গাম আলীসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
নদী বন্দর/এসএইচবি