পটুয়াখালীর নীলগঞ্জ ইউনিয়নের গৈয়াতলা বেড়িবাঁধে আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন ওই ইউনিয়নের ৬ গ্রামের অন্তত ১০ হাজার মানুষ। তাদের দাবি, সরকার যেন দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের উদ্যেগ নেয়।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নকে রক্ষায় প্রায় ৫০ বছর আগে সোনাতলা ও আন্ধারমানিক নদীর তীরে নির্মাণ করা হয় ৪০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে বেড়িবাঁধ। নির্মাণের পর নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে এ বাঁধের বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙন দেখা দেয়। পরে ভাঙন এলাকা মেরামতও করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সর্বশেষ গত বছরের অক্টোবরে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে এ বাঁধের গৈয়াতলা পয়েন্টের ১২০ মিটার অংশে ভাঙন দেখা দেয়। পরে এ বছরের মে মাসে ঘূর্নিঝড় মোখা থেকে সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষায় ওই অংশে ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু জরুরী এই সংস্কারের আড়াই মাসের মাথায় ফের ভাঙন শুরু হয় ওই পয়েন্টে। সোনতলা নদীতে বিলীন হয়ে যায় জিও ব্যাগসহ রিভার সাইটের ৭০ মিটার বাঁধ।
এছাড়া ফাটল দেখা দিয়েছে বাঁধের বড় অংশ জুড়ে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন গৈয়াতলা, উমেদপুর, হাকিমপুর, মোহাম্মদপুর, মস্তফাপুর ও পূর্ব সোনাতলা গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ।
গৈয়াতলা এলাকার বাসিন্দা কালাম মিয়া জানান, জিওব্যাগ ফালানোর কাজ ভালোভাবে করা হয়নি। যার ফলে এখন আবার ভাঙন শুরু হয়েছে। বর্তমানে বেড়িবাঁধের বড় অংশজুড়ে ফাটল ধরেছে। সামনের অমাবশ্যার স্রোতে বেড়িবাঁধের গৈয়াতলার অংশ নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে। যদি বেড়িবাঁধ বিলীন হয় তাহলে আমাদের দুর্ভোগের শেষ থাকবে না। আমরা সরকারের কাছে এখানে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানাচ্চি।
একই এলাকার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব কৃষক সাইয়েদ মিয়া জানান, বাঁধ মেরামতের কাজটি ভালোভাবে করা হয়নি। যার কারণে আবারও ভাঙন শুরু হয়েছে। বেড়িবাঁধের যে অংশে ভাঙছে আমাদের বাড়ি এর পাশেই। আমরা অনেকটা আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছি। বেড়িবাঁধ পুরোপুরি বিধ্বস্ত হলে আমরা এখানে আর বসবাস করতে পারবো না। অনাবাদি থাকবে ফসলি জমি। এ বাঁধটি পুননির্মাণ করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
কলাপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খালেদ বিন অলীদ জানান, গৈয়াতলা বেড়িবাঁধ ৪৬ পোল্ডারের মধ্যে। ওই পোল্ডারে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্যে বর্তমানে সমীক্ষা চলছে।
নদী বন্দর/এসএইচবি