নানা আয়োজনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ভারতের ৭২তম প্রজাতন্ত্র দিবস। মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানী দিল্লিতে এ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজ। প্রথমবারের মতো অংশ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১২২ জনের একটি চৌকস দল। প্রতিবছর এ আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে একজন বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান উপস্থিত থাকেন। অতীতে পাকিস্তান-চীনের মতো দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও গত ৫৫ বছরের ইতিহাসে কখনোই আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বাংলাদেশকে।
ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এ বারের কুচকাওয়াজে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী সমন্বয়ে গঠিত একটি দল । এ লক্ষ্যে ১২২ সদস্যের প্রতিনিধি দল এর মধ্যে পৌঁছেছে দিল্লি। ভারত সরকারের আমন্ত্রণে যোগ দেয়া এ দলটি সাহসী মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরাধিকার। এতে আছেন ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে গর্বিত বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও আর্টিলারি রেজিমেন্টের সদস্যরা। এর আগে দুটি মাত্র দেশ সম্মানজনক এ কুচকাওয়াজে অংশ নিয়েছে। ২০১৬ সালে ফ্রান্স এবং ২০১৭ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সদস্যরা অংশ নেন কুচকাওয়াজে।
কুচকাওয়াজের পাশাপাশি প্রতিবছরের আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নেন বিদেশী কোন রাষ্ট্রপ্রধান। তবে অদ্ভূত হলেও সত্য প্রজাতন্ত্র দিবসের এ অনুষ্ঠানিকতায় এখন পর্যন্ত কখনোই আমন্ত্রণ পাননি বাংলাদেশের কোন রাষ্ট্রপ্রধান। গত ৫৫ বছর ধরে বিদেশী অতিথিদের তালিকায় ঠাঁই পাওয়াদের মধ্যে কঙ্গো, টোবাগো, জাম্বিয়ার মতো দেশও বাদ পড়েন নি। সবেচয়ে বেশি ৫ বার যোগ দিয়েছে ফ্রান্স। ৪ বার করে যোগ দিয়েছেন ভুটান ও রাশিয়া।
দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতের চীর শত্রু পাকিস্তানের রাষ্ট্রপ্রধানরা যোগ দেয়ার সুযোগ পেয়েছেন ২ বার, সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘাত হয় যাদের সাথে, সে চীনও আমন্ত্রণ পেয়েছে একবার। কিন্তু মুখে সবচে ঘনিষ্ঠ বন্ধুর খেতাব পাওয়া বাংলাদেশকে কখনোই জানানো হয় নি আমন্ত্রণ। এ অঞ্চলের শ্রীলঙ্কা ২ বার, মিয়ানমার, মালদ্বীপ, আফগানিস্তান, কাজাখাস্তানের মতো দেশ যোগ দিয়েছেন একবার করে। স্বভাবতই তাই প্রশ্ন উঠছে, পুরো বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ যখন উন্নয়নের রোল মডেল, সেখানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানাতে ভারতের এ অনীহার কারণ কি?
নদী বন্দর / জিকে