বিচ্ছিন্ন দু-একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ছাড়া সারা দেশের ৫৯ জেলায় ১৩৯ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার (৮ মে) সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
প্রথম ধাপের এই নির্বাচনে ১ হাজার ৬৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৭০ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ৬২৫ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৪০ জন প্রার্থী রয়েছেন। পাঁচ উপজেলায় তিন পদে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫ জন নির্বাচিত হয়েছেন।
সারা দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রথম ধাপে ১৫২ উপজেলায় ভোটগ্রহণের তফসিল ঘোষণা করা হয়। তবে হাতিয়া, মুন্সীগঞ্জসদর, বাগেরহাট সদর, পরশুরাম ও শিবচর এই পাঁচ উপজেলার সব পদের প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। এই পাঁচ উপজেলায় কোনো পদে ভোটের প্রয়োজন পড়েনি। এ ছাড়া পার্বত্য জেলা বান্দরবানে তিনটিসহ আট উপজেলায় বিভিন্ন কারণে নির্বাচন স্থগিত করেছে ইসি।
ভোটগ্রহণ শুরু হয় সকাল ৮টায়। আর দুপুর ১টার দিকে ঢাকার আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন অফিসে কমিশনের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, বেলা ১২টা পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচনে গড়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ভোট পড়েছে। বৈরি আবহাওয়ার কারণে কোথাও কোথাও ভোটার উপস্থিতি কম। এখন পর্যন্ত ভোট নির্বিঘ্নে হচ্ছে, ভালো ভোট হচ্ছে।
ইসি সচিব জানান, খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার একটি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করা হয়েছে। এ ছাড়া, তেমন কোথাও বড় সহিংসতা হয়নি। ইভিএম নিয়েও কোথাও কোনো সমস্যা হয়নি।
এদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৩২ কাটানিসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সরাইল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অবৈধভাবে ব্যালটে সিল মারার সময় হাতেনাতে একজনকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দণ্ডিত শাকির মিয়া ওই কেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। একই কেন্দ্রে অপর পোলিং এজেন্ট হৃদয় মিয়াকে ভোটারদের ভোট দিতে প্ররোচিত করায় ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও রাকিব হোসেন নামে এক যুবককে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সুনামগঞ্জের শাল্লায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। উপজেলার চব্বিশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের সামনে ঘোড়া ও আনারস প্রতীকের সর্মথকদের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। শাল্লা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কেন্দ্রে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
ভোটগ্রহণ শেষে কিছুটা সময় বিরতির পর ভোটগণনা শুরু হয়েছে। ১১৭ উপজেলার সকল কেন্দ্রে ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। আর ২২ উপজেলার সকল কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে, সেখানে দ্রুত ভোট গণনা শেষ হবে। ব্যালটে ভোট নেওয়া কেন্দ্রের ফলাফল পেতে কিছুটা সময় লেগে যাবে।
নদী বন্দর/এবি