মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি, রাষ্ট্রপতি ইউ উইন মিন্ট এবং অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের আটকের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টাফেন দুজারিক এক বিবৃতিতে এসব জানান।
জাতিসংঘ মহাসচিব মিয়ানমারের নির্বাহী এবং বিচারিক ক্ষমতা সামরিক বাহিনীতে স্থানান্তরের ঘোষণার বিষয়ে তার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এসব ঘটনা মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক সংস্কারে মারাত্মক আঘাত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
জাতিসংঘ মহাসচিব সামরিক নেতৃত্বকে মিয়ানমারের জনগণের ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং গণতান্ত্রিক রীতিনীতি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে যে কোনও মতপার্থক্য সমাধান করা উচিত। সকল নেতাকে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক সংস্কারের বৃহত্তর স্বার্থে, অর্থবহ সংলাপে লিপ্ত হওয়া, সহিংসতা থেকে বিরত থাকা এবং মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতাকে পুরোপুরি সম্মান করতে হবে।
তিনি, মিয়ানমারের জনগণের কাছে গণতন্ত্র, শান্তি, মানবাধিকার এবং আইনের শাসনের পেছনে জাতিসংঘের অটল সমর্থনকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে আবারও ক্ষমতা গ্রহণ করেছে সেনাবাহিনী। সে সঙ্গে মিয়ানমারের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন দেশটির সামরিক বাহিনী সমর্থিত ভাইস প্রেসিডেন্ট মিন্ট সোয়ে। ক্ষমতা গ্রহণের পরই এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন তিনি। এর আগে সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) ভোরে দেশটির রাষ্ট্রপতি উইন মিন্ট ও ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চিসহ দলের শীর্ষ নেতাদের আটক করে সেনাবাহিনী।
গত বছরের ৮ নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) বড় জয় পায়। সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ৩২২টি আসন, যদিও এনএলডি ৩৪৬টি পায়। এদিন নবনির্বাচিত সংসদের প্রথম অধিবেশন হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই সেনাবাহিনী ক্ষমতা নিজেদের পক্ষে নিল।
এদিকে রাজধানী নিপিডসহ প্রধান শহর শহরগুলোতে মোবাইল ইন্টারনেট এবং টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সম্প্রচারও বন্ধ রয়েছে।
গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সেনাবাহিনী আবার ক্ষমতা দখল করবে এমন গুঞ্জন চলছিল। প্রায় পাঁচ দশক ধরে মিয়ানমারে ক্ষমতায় ছিল দেশটির শক্তিশালী সেনাবাহিনী। গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সু চির দল এনএলডি জয় পায়। তবে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলেছে সেনাবাহিনী।
নদী বন্দর / পিকে