সারাদেশে পুকুর, খাল উন্নয়ন বা খননের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)। প্রকল্পটির কাজ চলছে ২০১৭ সালের জুলাই থেকে। কিন্তু আড়াই বছরে বা ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মাত্র ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ কাজ বাস্তবায়ন হয়েছে। আর্থিক অগ্রগতি আরও কম, মাত্র ৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
এদিকে মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে চলতি অর্থবছরে প্রকল্পটি নিম্ন অগ্রাধিকার তালিকায় আছে। এ অর্থবছরে প্রকল্পটির জন্য বরাদ্দ ৪৫ কোটি টাকা। পরিকল্পনা মোতাবেক প্রত্যাশিত অগ্রগতি নিশ্চিত করতে এই মুহূর্তে মূলধন খাতে অন্তত ১০৫ কোটি বরাদ্দ চায় এলজিইডি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে অতিরিক্ত ১০৫ কোটি বরাদ্দ চেয়ে অর্থ বিভাগ ও পরিকল্পনা কমিশনকে চিঠি দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
এলজিইডি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) প্রকল্পটির জন্য ৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে প্রকল্পটির ভৌত অগ্রগতি ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৬৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বা ৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ। আলোচ্য প্রকল্পের আরডিপিপি (সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) মোতাবেক যাবতীয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
চলতি অর্থবছরে প্রকল্পটি নিম্ন অগ্রাধিকার তালিকাভুক্ত থাকায় গত অর্থবছরে শুধু প্রশাসনিক ব্যয় ছাড়া কোনো অর্থ বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে, চলতি অর্থবছরের প্রকল্পটির বিপরীতে মোট ৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও এ যাবত তৃতীয় কিস্তি পর্যন্ত মোট ২৭ কোটি টাকা অবমুক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে রাজস্ব ১৫ কোটি এবং মূলধন ১২ কোটি টাকা। মূলধন খাতের এ অর্থ প্রকৃত প্রয়োজনের তুলনায় অপর্যাপ্ত।
কর্মকর্তারা আরও জানান, জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্তই এ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের প্রকৃত সময়। বর্তমানে ১৯ কোটি টাকার চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে এবং মাঠ পর্যায়ে কাজ চলমান রয়েছে। ২০২১ সালের জানুয়ারি নাগাদ চলমান কাজের চুক্তিমূল্য ২৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। গত অর্থবছরে বাস্তবায়িত কাজের বিপরীতে মাঠ পর্যায়ে পরিশোধের পর প্রায় ২৫ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। পরিকল্পনা মোতাবেক প্রত্যাশিত অগ্রগতি নিশ্চিত করতে এ মুহূর্তে মূলধন খাতে অন্তত ১০৫ কোটি বরাদ্দের প্রয়োজন। এ প্রেক্ষাপটে চলতি অর্থবছরের এডিপিতে অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রদানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, ২০১৭ সালের ২৯ আগস্ট জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। এর মোট খরচ ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৩৩৪ কোটি ৯৮ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রকল্পটির প্রথম সংশোধন আনা হয়। সংশোধনীতে এর খরচ বাড়িয়ে ধরা হয় ১ হাজার ৭৫৭ কোটি ৪৭ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। আর প্রকল্পটি মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয় ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত।
নদী বন্দর / জিকে