মিয়ানমারের ৩০ শহরের ৭০টি হাসপাতাল এবং অন্যান্য মেডিকেল বিভাগের কর্মীরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। দেশে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে পথে নামতে তারা সব ধরনের সেবা দেয়া বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সদ্য গঠিত মিয়ানমারের বেসামরিক আন্দোলনের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর রয়টার্সের।
দেশটির ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) প্রধান অং সান সু চি, দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করে সেনাবাহিনী। সোমবার সকালে অভিযান চালিয়ে এসব নেতাকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এনএলডির মুখপাত্র মিও নিয়ুন্ট।
গত বছরের নভেম্বরের নির্বাচনে অং সান সুচির এনএলডি সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। তারপর থেকেই মূলত দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার শুরু। প্রথম থেকেই সেনাবাহিনী নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ করে আসছে। নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ এনেই মূলত সোমবার ক্ষমতা দখল করেছে সেনাবাহিনী। একই সঙ্গে দেশজুড়ে এক বছরের জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
বেসামরিক আন্দোলনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির কারণে এমনিতেই দেশের পরিস্থিতি ভালো না। সেনাবাহিনী দুর্বল জনগোষ্ঠীর ওপর নিজেদের স্বার্থ চাপিয়ে দিয়েছে। মিয়ানমারে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩ হাজার ১শ’র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে মৃত্যুতে শীর্ষে থাকা দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম মিয়ানমার।
বিক্ষোভকারী দলের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অবৈধ সামরিক শাসনের কোনো নির্দেশ আমরা মেনে চলব না। বিক্ষোভে অংশ নেয়া চার চিকিৎসক নিশ্চিত করেছেন যে তারা কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। তবে তারা তাদের পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি।
ইয়াঙ্গুন থেকে ২৯ বছর বয়সী এক চিকিৎসক বলেন, আমি চাই সেনারা তাদের নিজেদের জায়গায় ফিরে যাক। তাদের জন্যই আমরা এখন হাসপাতালে যাচ্ছি না। আমি জানি না যে কতদিন আমরা কাজ বন্ধ রাখব। এটা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে।
শিক্ষার্থী এবং তরুণদের বিভিন্ন গ্রুপও এই বেসামরিক আন্দোলনে যোগ দিয়েছে। চিকিৎসকরা যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তার বিরুদ্ধে সামরিক সরকার কি সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা জানা যায়নি।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিন্দা ও সমালোচনার পরেও শান্তিতে নোবেল জয়ী অং সান সুচিকে (৭৫) এখনও মুক্তি দেয়া হয়নি। এনএলডির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রাজধানী নেপিদোতে সু চি এখন গৃহবন্দি। তবে তার শারীরিক অবস্থা ভালো আছে।
নদী বন্দর / জিকে