ইংরেজিকে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ভাষা (দাপ্তরিক ভাষা) হিসেবে ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার (১ মার্চ) তিনি এ বিষয়ে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন, যাতে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ভাষা হিসেবে ইংরেজি নির্ধারণ করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, নতুন এই আদেশের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থা ও ফেডারেল অর্থায়নপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের নথিপত্র ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে অবশ্যই ইংরেজি ব্যবহার করতে হবে। তবে তাদের এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ থাকবে যে তারা ইংরেজি ছাড়া অন্য ভাষায় নথি ও পরিষেবা প্রদান চালিয়ে যাবে কি না।
ট্রাম্পের এই নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের একটি নির্বাহী আদেশ বাতিল করা হয়েছে। বিল ক্লিনটনের আদেশ অনুযায়ী, সরকারি ও ফেডারেল অর্থায়নপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোকে ইংরেজি না জানা ব্যক্তিদের ভাষাগত সহায়তা দিতে বাধ্য করা হয়েছিল।
নতুন আদেশে বলা হয়েছে, ‘ইংরেজিকে সরকারি ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করলে যোগাযোগ সহজতর হবে, জাতীয় মূল্যবোধ আরও দৃঢ় হবে এবং একটি ঐক্যবদ্ধ ও কার্যকর সমাজ গঠনে সহায়তা করবে।’
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘নতুন আমেরিকানদের স্বাগত জানানোর ক্ষেত্রে আমাদের জাতীয় ভাষা শেখার ও গ্রহণের নীতি যুক্তরাষ্ট্রকে আরও ঐক্যবদ্ধ করতে সাহায্য করবে এবং নতুন নাগরিকদের আমেরিকান স্বপ্ন অর্জনের পথে ক্ষমতায়িত করবে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশে আরও বলা হয়, ‘ইংরেজি জানা কেবল অর্থনৈতিক সুযোগের দ্বার উন্মুক্ত করে না, এটি নতুন অভিবাসীদের তাদের সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে, জাতীয় ঐতিহ্যে অংশ নিতে এবং সমাজে অবদান রাখতে সহায়তা করে।’
ইউএস ইংলিশ নামক একটি সংস্থার তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রের ৩০টিরও বেশি রাজ্য ইতিমধ্যে ইংরেজিকে সরকারি ভাষা হিসেবে ঘোষণা করেছে। সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ভাষা হিসেবে ইংরেজি প্রতিষ্ঠার পক্ষে দীর্ঘদিন ধরে প্রচারণা চালিয়ে আসছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের আইনপ্রণেতারা কয়েক দশক ধরে সরকারি ভাষা হিসেবে ইংরেজির স্বীকৃতির জন্য বিভিন্ন বিল উত্থাপন করেছেন, তবে এই প্রচেষ্টা এতদিন সফল হয়নি। গত মাসে ট্রাম্পের অভিষেকের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নতুন প্রশাসন হোয়াইট হাউসের সরকারি ওয়েবসাইট থেকে স্প্যানিশ ভাষার সংস্করণ সরিয়ে ফেলে।
এই পরিবর্তনে হিস্পানিক অধিকার সংগঠনসহ অনেকে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তবে হোয়াইট হাউস তখন জানিয়েছিল, তারা ওয়েবসাইটের স্প্যানিশ সংস্করণ পুনরায় চালু করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তবে শনিবার পর্যন্ত সেটি পুনরায় চালু করা হয়নি। এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে হোয়াইট হাউস তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদেও ওয়েবসাইটের স্প্যানিশ সংস্করণ বন্ধ করেছিলেন। পরে ২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি পুনরায় চালু করা হয়।
সোর্স: এপি, এএফপি
নদীবন্দর/এএস