চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-মা ও দুই বোন হারিয়েছেন তিন দিন আগে। একই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন তাসনিয়া ইসলাম প্রেমাও (১৮)। তাকে ভর্তি করা হয়েছিল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় প্রেমার। তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে পরিবারে আর কেউ বেঁচে রইল না।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় তার মরদেহ ঢাকায় নেয়ার তোড়জোড় চলছিল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে। তাকে দাফন করা হবে মিরপুরের কবরস্থানে মা, বাবা ও দুই বোনের পাশে। একসঙ্গে পুরো পরিবার নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় হতবিহ্বল হয়ে পড়েছেন স্বজনেরা।
মরদেহ নিতে আসা তাসনিয়ার মামা রবিউল হাসান বলেন, ‘একটা পরিবার পুরোপুরি শেষ হয়ে গেল। আমার বৃদ্ধ মা এই ঘটনার পর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। চোখের সামনে মেয়ে, জামাতা, নাতনিদের মৃত্যু দেখতে হলো তাকে। এই দুর্ঘটনা আমাদের দিকে তিন মায়ের বুক খালি করেছে। এ ছাড়া দিলীপ বাবুর মা-বাবাও দেখলেন ছেলে ও পুত্রবধূর মরদেহ। এক দুর্ঘটনা কত মায়ের বুক খালি করল!’
এর আগে গত বুধবার চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় তাসনিয়াসহ ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তাসনিয়ার মা, বাবা, দুই বোনসহ একই পরিবারের পাঁচজন রয়েছেন। ঘটনাস্থলে মারা যাওয়া তাসনিয়ার মা লুৎফুন নাহার, বাবা রফিকুল ইসলাম এবং দুই বোন আনিশা আক্তার ও লিয়ানার মরদেহ বৃহস্পতিবার মিরপুর–১১ নম্বরে কালশী কবরস্থানে দাফন করা হয়। একই স্থানে দাফন করা হয় রফিকুল ইসলামের ভাগনি তানিফা ইয়াসমিনকেও। এখন তাসনিয়াকেও তাদের পাশে কবর দেয়া হবে।
নিহত রফিকুল ইসলাম ঢাকায় একটি পোশাক কারখানার কর্মকর্তা ছিলেন। বাড়ি পিরোজপুরে। তিনি ঢাকায় মা ও পরিবার নিয়ে থাকতেন। ঈদের ছুটিতে রফিকুল ইসলাম নিজের পরিবার, সহকর্মী দিলীপ বিশ্বাসের পরিবারসহ কক্সবাজারে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। বুধবার সকালে তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়ার জাঙ্গালিয়া এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাসের সঙ্গে ধাক্কা খায়। ওই দিনই ১০ জন মারা যান। আজ তাসনিয়ার মৃত্যু হয়।
নিহত অন্যরা হলেন- দিলীপ বিশ্বাস ও তার স্ত্রী সাধনা মণ্ডল, সাধনার স্বজন আশীষ মণ্ডল, রফিকুলের স্বজন মোক্তার আহমেদ এবং চালক ইউছুফ আলী।
নদীবন্দর/জেএস