প্রতিদিনকার দূষণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের ফুসফুস। অথচ শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো ফুসফুস। বায়ুদূষণ ও ধূমপানের কারণে ফুসফুসে বাসা বাঁধছে নানা জটিল রোগ।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব ঠেকাতে নিয়মিত কিছু ভেষজ উপাদান খাওয়া প্রয়োজন, যা শ্বাসযন্ত্রের সুরক্ষা প্রদানে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে।
বিশেষ করে মহামারির এই সময় সবারই উচিত ফুসফুসের সুরক্ষায় বাড়তি যত্ন নেওয়া। বায়ুদূষণ ও সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্ক পরা যেমন জরুরি; তেমনি ফুসফুসে জমে যাওয়া ময়লা দূর করাও জরুরি।
নিয়মিত ভেষজ উপাদান খাওয়ার মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর রাখা যেতে পারে ফুসফুস। তাই ডায়েটে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস, ভিটামিন এ, ই, ডি, সি, ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়ামের মতো খনিজগুলো রাখতে হবে।
এসব উপাদান ফুসফুস সুস্থ রাখতে কাজ করে। এর সঙ্গে প্রতিদিন শরীরচর্চা ও ফুসফুসের ব্যায়াম করলেও মিলবে উপকার। ভেষজ কিছু উপাদান রয়েছে যেগুলো খেলে ফুসফুস থাকবে সুস্থ-
>> হলুদের স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে সবাই কমবেশি জানেন নিশ্চয়ই! সবার রান্নাঘরেই এ মসলাটি থাকে। হলুদে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-সেপটিক ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানসমূহ।
>> হলুদে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ফুসফুসের কার্মক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। হলুদ একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ভাইরালও, যা ফুসফুসে প্রভাবিত ভাইরাল সংক্রমণকে দূরে রাখতে সাহায্য করে এবং শরীরকে সুস্থ রাখে।
>> বায়ুদূষণের ফলে ফুসফুসে জমে যাওয়া ময়লা পরিষ্কার করতে পারে তুলসি। বিভিন্ন রোগের মহৌষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয় তুলসি। এর পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট।
>> বাতাসে থাকা ধূলিকণা শোষণ করতে পারে তুলসি গাছ। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন অল্প করে তুলসি পাতার রস খেলে শরীরের শ্বাসযন্ত্রের দূষিত পদার্থ দূর হয়।
>> মসলা হিসেবে ওরিগ্যানোর ব্যবহার হয় অনেক। বিশেষ করে ইতালিয়ান খাবারে এর ব্যবহার বেশি হয়। ওরিগ্যানোতে রয়েছে রোজমারিনিক অ্যাসিড, যা ফুসফুস পরিষ্কারে কাজ করে। এটি দেহে প্রদাহ সৃষ্টি করার জন্য দায়ী হিস্টামিনকে হ্রাস করতে সহায়তা করে।
>> ওরিগ্যানোতে থাকা কারাক্রোল, ফুসফুসে জমাট বাঁধা রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করে। ওরিগ্যানো অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন, যা ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা অন্যান্য রোগের সংক্রমণ থেকে ফুসফুসকে রক্ষা করে।
>> বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন একটি করে আপেল খেলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, সপ্তাহে পাঁচটির বেশি আপেল খেলে ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়ে। অ্যাজমার মতো বেশকিছু রোগ থেকেও বাঁচায় আপেলে থাকা পুষ্টিগুণ।
>> কালোজিরা সব রোগের মহৌষধ হিসেবে বিবেচিত। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শ্বাসনালীর প্রদাহ দূর করে। প্রতিদিন আধা চা চামচ কালোজিরার গুঁড়া এক চা চামচ মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে ফুসফুস ভালো থাকে।
>> একটি কমলার চেয়েও বেশি ভিটামিন সি থাকে আমলকিতে। ফুসফুসের বিভিন্ন সংক্রমণ রোধ করে আমলকি। প্রতিদিন আমলকি খেলে ফুসফুসের সব ময়লা পরিষ্কার হয়ে যায়। এ ছাড়াও শ্বাসযন্ত্রে অক্সিজেন সরবরাহ করতে ও শ্বাসনালীর জীবাণু ধ্বংস করে আমলকি।
নদী বন্দর / জিকে