রাজধানীর মতিঝিলে নটরডেম কলেজের একটি ভবন থেকে নিচে পড়ে ধ্রুবব্রত দাস (১৮) নামে এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (১২ মে) বেলা তিনটার দিকে এই ঘটনা ঘটে। তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বিকেল সোয়া ৪টায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত ধ্রুবব্রত দাসের বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সদর থানার মধ্যপাড়া এলাকায়। তিনি ওই এলাকার বাণী ব্রত দাসের ছেলে। বর্তমানে টিকাটুলির ৪৮/৯ বাসার মাসকান ভিলার ৩/এ বাসায় ভাড়া থাকতেন।
ওই শিক্ষার্থীর মা তমা রানি সিং দাবি করেন, তার ছেলেকে কেউ ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে। এটি একটি হত্যাকাণ্ড।
নিহত শিক্ষার্থীর মা তমা রানি সিং বলেন, আমার ছেলে অনেক শান্তশিষ্ট, ভদ্র ছিল, আমার দুইটাই ছেলে। আজ টেস্ট পরীক্ষার রেজাল্টের কার্ড আনতে কলেজে গিয়েছিল। এই বছর নটরডেম কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে তার এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। তার বাবা তার সঙ্গে কলেজে গিয়েছিল, তবে গার্ডিয়ান কলেজে ঢুকতে না দেওয়ায় তার বাবা বাহিরে দাঁড়িয়ে ছিল। এক-দেড় ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও সে বের না হলে আমাকে ফোন দেয়। পরে আমি তার বাবাকে জানাই, তার কাছে ছোট মোবাইল আছে তাকে ফোন দাও; তার বাবা বেশ কয়েকবার ফোন দিলেও সে ফোন ধরেনি। এর কিছুক্ষণ পরে কয়েকজন শিক্ষার্থীসহ তাকে গেটের বাইরে নিয়ে আসলে জানায়— সে ভবন থেকে পড়ে গেছে। পরে তাকে প্রথমে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও বলেন, সে এভাবে পড়ে মারা যেতে পারে না; তাকে হয়ত কেউ ধাক্কা দিয়ে ফেলে মেরে ফেলেছে।
নিহতের কয়েকজন সহপাঠী জানায়, আমরা কমার্স ভবনের এক তলায় ছিলাম। সে কি কারণে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হয়ে কমার্স ভবনে এসেছিল সেটা বলতে পারি না। আমাদের কমার্স ভবন থেকেই সে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হয়।
নটরডেম কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক শুভাশিষ সাহা বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেলে এসে শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে পেরেছি কমার্স ভবনের যেকোনো ফ্লোর থেকে সে নিজেই পড়ে মারা গেছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখলে জানা যাবে এটি হত্যা না দুর্ঘটনা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. শাহরিয়ার আলী বলেন, আমরা ঘটনার বিষয়টি জানতে পেরেছি। প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পারি তৃতীয় তলার রেলিংয়ের ওপর সে বসা ছিল, সেখান থেকেও অসাবধানতাবশত নিচে পড়ে মারা যেতে পারে। তদন্ত চলছে বিস্তারিত পরে জানা যাবে।
নদীবন্দর/জেএস