২৫টি বাসে করে এসে কাকরাইল মোড়ে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা। তিন দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো তাদের কর্মসূচি চলছে। সেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন জবির সাবেক শিক্ষার্থীরাও।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুরে আন্দোলনস্থলে সরিজমিনে গিয়ে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
এর আগে বুধবার দিনভর আন্দোলনের পর রাতেও শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থান করেন। আজও সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন।
এদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের একাত্তরের গণহত্যা ভাস্কর্যের সামনে ২৫টি বাস কাকরাইল মোড়ের সামনে যমুনার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। এসব বাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তারা ছিলেন। যেসকল ছাত্রীরা হলে এবং আশপাশের মেসে থাকতেন, তারা ক্যাম্পাসে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি যোগে আন্দোলনের উদ্দেশে বের হন।
শুধু তাই নয়, নিজ ক্যাম্পাসের যৌক্তিক দাবি আদায়ে চলমান আন্দোলনে যোগ দিতে ঢাকায় আসছেন সাবেক শিক্ষার্থীরাও। চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন জেলা শহর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা করেছেন সাবেকরাও। বুধবার রাতে অনেকেই এসে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন।
জামালপুর থেকে আসা মুকুল হোসেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘জামালপুর টু যমুনা। শুধুমাত্র কালকে যা হয়েছে, সেজন্য যমুনায় না যেয়ে থাকতে পারছি না। একজন সাবেক জবিয়ান হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর আঘাত সহ্য করতে পারি না। আমি ১৩তম ব্যাচ।’
চট্টগ্রাম থেকে ছুটে আসা ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী একরামুল হক এরফান বলেন, ‘গতকাল দুপুরের দিকে যখন লাইভে দেখলাম আমার শিক্ষক, ভাইদের উপর পুলিশ হামলা চালাচ্ছে, তখন আর মনস্থির করতে পারলাম না। অফিস শেষ করে সন্ধ্যায় ঢাকার উদ্দেশে বেরিয়ে পড়েছি। ভোর চারটায় এসে ঢাকায় নেমেছি। আমাদের ন্যায্য দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা যাবো না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘সকাল থেকে বাসে করে শিক্ষার্থীরা আমাদের আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে চক্রাকার বাস চালু আছে, শিক্ষার্থীরা এসে জড়ো হলেই বাসে করে নিয়ে আসা হচ্ছে। এছাড়া ঢাকার শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে সাবেক শিক্ষার্থীরাও এসে আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন।’
এর আগে মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধি দল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) যান। কিন্তু ইউজিসি থেকে আশানুরূপ কোনো ঘোষণা না আসায় ‘লংমার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
ওই দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘জুলাই ঐক্য’ সংগঠনের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর বুধবার সকাল থেকেই শুরু হয় আন্দোলন।
নদীবন্দর/জেএস