সারাদেশে বাস্তবায়ন হচ্ছে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প। সরকারের কোনো কোনো কর্মকর্তা একাই একাধিক প্রকল্প পরিচালকের (পিডি) দায়িত্ব নিয়ে বসে আছেন। এমনকি ১৪টি প্রকল্পের দায়িত্বে রয়েছেন একজন পিডি। একজন পিডি একাধিক প্রকল্পের দায়িত্বে থাকার এই অবস্থাকে সম্প্রতি ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ অবস্থায় সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের পিডিদের নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসিতে ‘২০২০-২১ অর্থবছরে নির্বাচিত চলমান প্রকল্পের নিবিড় পরিবীক্ষণ ও সমাপ্ত প্রকল্পের প্রভাব মূল্যায়ন সংক্রান্ত’ ওরিয়েন্টেশন কর্মশালায় এ কথা জানান তিনি।
কর্মশালায় অংশ নেয়া পিডিদের উদ্দেশে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘পিডিরা যারা এসেছেন, আপনাদের সম্পর্কে অনেক আলোচনা হচ্ছে বাজারে। আপনারা তো দেখেন, বোবা-কালা নন আমাদের মতো। তাই আপনাদের অনেক বেশি দায়িত্ব আছে। সরকারের উচ্চপর্যায়ে পিডি সমন্ধে চিন্তা-ভাবনা চলছে। এটাকে কীভাবে আরও বড় করা যায়, শক্তিশালী করা যায়, আপনাদের চলার পথে বাধাগুলো কীভাবে সরিয়ে দেয়া যায়– এগুলো চিন্তা-ভাবনা চলছে। আমরা হয়তো নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে আসবো, কিন্তু চাপিয়ে দেব না। আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করবো। উভয়পক্ষে আলোচনা করবো। সেভাবে কাজ করার প্রয়োজন আছে।’
চলতি অর্থবছরে ২২টি প্রকল্প নিবিড় পরিবীক্ষণের জন্য এবং ৮টি প্রকল্প প্রভাব মূল্যায়নের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। বিশদ এই মূল্যায়নের জন্য নিযুক্ত ফার্মগুলোর প্রধানরাও কর্মশালায় অংশ নেন।
ফার্মের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদেরকে যারা সহায়তা করেন, সংস্থায় যারা আছেন তাদের মধ্যে অনেকে অবসর গ্রহণ করেছেন, সারাজীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে আপনারা আজকে এ কাজে এসেছেন। আমরা আপনাদের কাছ থেকে অত্যন্ত ক্ষুরধার, ফোকাসড, নিষ্ঠুর পর্যালোচনা আশা করি। কোনো খাতির নাই। নিরপেক্ষ, নিষ্ঠুর। ঠান্ডা পর্যালোচনা আপনাদের কাছ থেকে আশা করি। যাতে করে আমরা নিজেরা শিখি, বুঝি এবং নিজেদের কারেক্ট করি।’
বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে আসা অভিযোগের বিষয়ে এম এ মান্নান বলেন, ‘সকল কাজে আমাদের অবশ্যই ফেয়ার মাইন্ডেড হতে হবে। আমার কাছে প্রায়ই বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ আসে। পড়ে মনে হয় যে, আবেগে, রাগে, ক্ষোভে লিখেছে। তবু তার কথা শুনতে হবে। তখন বিধি মোতাবেক বিবেচনার জন্য প্রদীপের (আইএমইডি সচিব) কাছে পাঠাই, সিপিটিইউতে পাঠাই। বিধি মোতাবেক আমরা যেন সকলকে শুনি। ব্যক্তিগতভাবে যারা আমাদের কাছে আসবে, তারা যেন ফিল করে সভ্য, আইনানুগ প্রতিষ্ঠানে এসেছে। যেটা আইন দিয়ে চলে। বিরক্ত হলেও একবার, দুবার বিস্তারিত শুনতে হবে। কেন তার পয়েন্টটা ঠিক নয়, বুঝিয়ে বিদায় করতে হবে। রাগারাগি করবো না, আমি করবো না। এগুলো আমাদের সার্বক্ষণিক করা দরকার।’
নদী বন্দর / জিকে