ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণ করানোর দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তার সমর্থকরা। বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুপুর নাগাদ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে শতশত নেতাকর্মী এসে জড়ো হন রাজধানীর মৎস্য ভবন মোড়ে। এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন স্লোগান।
‘এই মাত্র খবর এলো, ইশরাক ভাই মেয়র হলো’, ‘ইশরাক ভাই ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘লড়াই করে বাঁচতে চাই’, ‘শপথ নিয়ে টালবাহানা চলবে না’—এমন সব স্লোগানে গুঞ্জরিত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না।
এর আগে, গতকাল বুধবার সকাল ১০টা থেকে কাকরাইল মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো মৎস্য ভবন এলাকায় অবস্থান নেন নেতাকর্মীরা।
সরাসরি ঘুরে দেখা যায়, ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সমর্থকরা স্লোগান দিচ্ছেন। কেউ আগে থেকে জড়ো হয়েছেন, কেউবা নতুন করে যুক্ত হচ্ছেন মিছিল নিয়ে। মৎস্য ভবন এলাকাটি এখন কার্যত আন্দোলনকারীদের দখলে। ফলে আশপাশের সড়কগুলোতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকেই বাধ্য হয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে নিচ্ছেন। কেউ কেউ হাঁটতে বাধ্য হচ্ছেন, প্রকাশ করছেন বিরক্তিও।
সমর্থকদের ভাষ্য, ‘ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করা হয়েছে। এখন তার শপথে বাধা মানা যায় না।’ তাদের অভিযোগ, আদালতের রায় ও গেজেট থাকার পরও শপথ নিয়ে টালবাহানা করা হচ্ছে। তারা বলছেন, এই অযৌক্তিক জটিলতার বিরুদ্ধে রাজপথেই হবে ফয়সালা।
অবস্থান কর্মসূচিতে আরও শোনা গেছে স্লোগান—‘রাজপথের ইশরাক ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’, ‘এ লড়াইয়ে জিতবে কারা, ইশরাক ভাইয়ের সৈনিকেরা’, ‘যমুনারে যমুনা, আমি কিন্তু যাব না’, ‘এনসিপির দাদালরা হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া—আমাদের প্রেরণা’ ইত্যাদি।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের সিটি নির্বাচনে বিএনপির হয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ইশরাক হোসেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস জয়ী হলেও, চলতি বছরের ২৭ মার্চ আদালত তাপসের জয় বাতিল করে ইশরাক হোসেনকে বৈধ বিজয়ী ঘোষণা করেন। এরপর ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে। তবে এখন পর্যন্ত তার শপথ অনুষ্ঠিত হয়নি। বিষয়টি ঘিরেই আন্দোলনে নেমেছেন তার সমর্থকরা।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। আন্দোলনের ফলে ঢাকা শহরের কেন্দ্রস্থলে জনদুর্ভোগ বাড়ছে বলেও জানিয়েছেন পথচারীরা।
নদীবন্দর/জেএস