1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন: লন্ডনে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠদের ১৫০০ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ - Nadibandar.com
রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ১২:১১ পূর্বাহ্ন
নদীবন্দর ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫
  • ২ বার পঠিত

লন্ডনে বাংলাদেশের সাবেক শাসকগোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ দুই ব্যক্তির মালিকানা থাকা দেড় হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করেছে ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ)। যা প্রায় ৯০ মিলিয়ন পাউন্ডের সমপরিমাণ।

শুক্রবার (২৩ মে) গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।

যুক্তরাজ্যের আদালতের আদেশে আহমেদ শায়ান রহমান ও তার চাচাতো ভাই আহমেদ শাহরিয়ার রহমান এখন এই দেড় হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বিক্রি করতে পারবেন না। এই সম্পত্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে লন্ডনের অভিজাত গ্রোসভেনর স্কয়ারে অবস্থিত অ্যাপার্টমেন্ট।

শায়ান ও শাহরিয়ার রহমান হলেন ধনকুবের সালমান এফ রহমানের ছেলে ও ভাতিজা। সালমান ছিলেন শেখ হাসিনার শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা। গত বছর ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পতনের সময় দেশত্যাগের সময় তিনি ধরা পরেন। বর্তমানে তিনি দুর্নীতির মামলায় কারাগারে আটক রয়েছেন।

দ্য গার্ডিয়ান ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের যৌথ অনুসন্ধানে জানা গেছে, শেখ হাসিনার মিত্রদের যুক্তরাজ্যে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের সম্পদ রয়েছে, যার অংশ হিসেবে নয়টি সম্পত্তি জব্দ করা হয়েছে।

এগুলো ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, আইল অব ম্যান ও জার্সির মতো অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কেনা হয়েছিল এবং প্রতি সম্পত্তির মূল্য ১২ লাখ থেকে ৩ কোটি ৫৫ লাখ পাউন্ড পর্যন্ত।

এনসিএ জানিয়েছে, ঘটনাটি চলমান বেসামরিক তদন্তের অংশ এবং তারা আরও সম্পত্তি জব্দের বিষয়ে কাজ করছে।

জব্দ সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে লন্ডনের গ্রেশাম গার্ডেনসে অবস্থিত একটি বাড়ি। সেখানে শেখ হাসিনার বোন ও সাবেক ব্রিটিশ মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের মা শেখ রেহানা বসবাস করেছেন বলে জানিয়েছে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস। এই সম্পত্তির দাম ৭ দশমিক ৭ মিলিয়ন পাউন্ড।

বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তদন্তে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। তিনি সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন এবং অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ইউকের নীতিনির্ধারক ডানকান হেমস বলেন, আমরা যুক্তরাজ্যের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানাই যেন তারা অবিলম্বে সন্দেহভাজন সব সম্পত্তি জব্দ করে।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মোমেনের উদ্ধৃতি দিয়ে জানানো হয়, সালমান ও আহমেদ রহমান দুদকের অর্থ আত্মসাতের তদন্তে সন্দেহভাজন।

আহমেদ রহমানের একজন মুখপাত্র বলেছেন, আমাদের ক্লায়েন্ট যেকোনো কথিত অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছেন। যুক্তরাজ্যে যেকোনো তদন্ত হলে তিনি অবশ্যই তাতে সহযোগিতা করবেন।

তারা আরও যোগ করেন, এটা সবাই জানে যে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে, যেখানে শত শত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ আনা হচ্ছে। আমরা আশা করব যে, যুক্তরাজ্যের কর্তৃপক্ষ এটি বিবেচনা করবে।

দ্য গার্ডিয়ান রহমান পরিবারের আইনজীবী ও সালমান রহমান প্রতিষ্ঠিত পারিবারিক করপোরেট সাম্রাজ্য বেক্সিমকোর প্রতিনিধিদের কাছে মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করেছে।

আহমেদ শায়ান রহমানের একজন মুখপাত্র এর আগে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, আমাদের মক্কেল তার বিরুদ্ধে আনা যে কোনো অভিযোগে জড়িত থাকার কথা জোরালোভাবে অস্বীকার করছেন। যুক্তরাজ্যে যেকোনো তদন্তে তিনি অবশ্যই সম্পূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করবেন।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে, যেখানে শত শত ব্যক্তির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আনা হচ্ছে—এটি সবারই জানা। আমরা আশা করি যুক্তরাজ্যের কর্তৃপক্ষ এসব বিষয় বিবেচনায় নেবে।

শেখ হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন এবং ভারতে আশ্রয় নেন। বর্তমানে তিনি ভারতে বসবাস করছেন।

শেখ হাসিনা শাসনামলের পতনের পর নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং পুলিশ, গণমাধ্যম ও বিচার বিভাগের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কারের চেষ্টা করছেন। তার দাবি, শেখ হাসিনার আমলে আওয়ামী লীগ সেগুলো কুক্ষিগত করে রেখেছিল।

গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানের পর ইউনূস কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে আহসান মনসুরকে দায়িত্ব দেন। পাশাপাশি ক্ষমতাচ্যুত সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেছে, তা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দেন মনসুরকে।

অন্তর্বর্তী সরকার এমন ব্যক্তিদের কিছু অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে এবং সম্পদ আটক করেছে এবং অর্থ পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য দেশের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করছে।

চলতি মাসে অন্তর্বর্তী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেছে। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সমর্থকরা অভিযোগ করেছেন, তারা পুরোনো সরকারের কথিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানের নামে রাজনৈতিক প্রতিশোধ নিচ্ছেন।

নদীবন্দর/এএস

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com