মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) প্রধান কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে তল্লাশি চালানোর পর কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির ফেসবুক পেজে বলা হয়েছে, রাত সাড়ে ৯টার দিকে সেনারা তল্লাশি চালায় এবং এনএলডি-এর হেডোয়ার্টার ভেঙে দেয়। তবে এ নিয়ে সু চির দলের পক্ষ থেকে বিস্তারিত বলা হয়নি।
এদিকে জান্তা সরকারবিরোধী বিক্ষোভে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে মিয়ানমারের রাজধানী নেইপিদো, ইয়াঙ্গুনসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি শহর। মঙ্গলবার সকাল না হতেই রাজপথে আপামর জনতার ঢল নামে। অনতিবিলম্বে সামরিক সরকারকে ক্ষমতা ছাড়ার আহ্বান জানিয়ে স্লোগান দেন বিক্ষুব্ধরা। অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে কয়েক হাজার সরকারি কর্মকর্তা শামিল হলে পরিস্থিতি সহিংস হয়ে উঠে। এদিন রাজধানী নেইপিদোর উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট ছোঁড়ে সেনা সদস্যরা।
মিছিলটি ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়লে রাজধানীজুড়ে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। আবারো জলকামান ও টিয়ার শেল ছোড়েন নিরাপত্তা সদস্যরা। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে গত এক দশকেও মিয়ানমারে এমন বিক্ষোভ দেখা মেলেনি। জনসমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে রাতে কয়েকটি শহরে কারফিউ বহাল রেখেছে সেনা শাসক। কঠোর বিধিনিষেধ আরোপে রাস্তায় বের হওয়ায় কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে দানা বাঁধছে অসন্তোষ।
এর আগে সোমবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে মিয়ানমারের সেনা প্রধান নতুন নির্বাচন দিয়ে গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিলেও আন্দোলনের মাত্রা আরো জোরালো হয়েছে।
বিক্ষোভ না দেখাতে আগেই সর্বোচ্চ হুঁশিয়ারি দিয়ে বর্তমান শাসক ও সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং জানান, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। সুতরাং আন্দোলন না থামালে যে কোনো কঠিন পদক্ষেপের জন্য সরকার দায়ী থাকবে না।
গত ১ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির স্টেট কাউন্সিলরকে উৎখাত করে দেশ চালানোর দায়িত্ব নেয় জান্তা সরকার। সামরিক বাহিনী এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছে। একই সঙ্গে তারা দেশটির স্টেট কাউন্সিলর সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ রাজনীতিক নেতাদের আটক করে।
সামরিক সরকারকে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে আহ্বান জানিয়ে আসছে জাতিসংঘসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো।
নদী বন্দর / এমকে