ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলার পর বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে হঠাৎ ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে। এতে করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে। হামলার ঘটনা ঘটে গত শনিবার (যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময়) সন্ধ্যায়। এর পরদিন রাতেই যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে তেলের ফিউচার দামে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি হয়।
তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। এতে প্রতি ব্যারেলের দাম দাঁড়িয়েছে ৭৬ দশমিক ৪৭ ডলার। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ‘ব্রেন্ট’ তেলের দাম বেড়ে হয়েছে ৭৪ দশমিক ৫৯ ডলার, যা ৩ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি।
তবে জ্বালানি খাতে দাম বাড়লেও, শেয়ারবাজারে ঠিক উল্টো চিত্র দেখা গেছে। ডাও ফিউচারস সূচক কমেছে ২৫০ পয়েন্ট বা ০.৬ শতাংশ। এছাড়া, এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ফিউচারস এবং নাসডাক ফিউচারস সূচকও কমেছে ০.৬ থেকে ০.৭ শতাংশ পর্যন্ত।
বিশ্ববাজারে এই অস্থিরতা চলাকালে, মার্কিন ডলারের মান কিছুটা বেড়েছে। ডলারের দাম বেড়েছে ০.৩ শতাংশ। সাধারণত বিশ্বে কোনো বড় রাজনৈতিক সংকট দেখা দিলে, ডলারের প্রতি আস্থা বাড়ে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির কারণে এই বাড়তি মূল্য কতদিন স্থায়ী হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা এবং যুক্তরাষ্ট্রের এই সামরিক পদক্ষেপের কারণে বাজারে অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে। এর প্রভাব প্রথমেই পড়ছে তেল ও বিনিয়োগ খাতে।
এরই মধ্যে ইরানের পার্লামেন্ট রোববার একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা হরমুজ প্রণালি বন্ধে অনুমোদন দিয়েছে। যদিও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ।
উল্লেখ্য, হরমুজ প্রণালি বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক পথ। বিশ্বজুড়ে ব্যবহৃত মোট জ্বালানি তেলের প্রায় ২০ শতাংশ এই পথ দিয়েই পরিবাহিত হয়। এই রুট বন্ধ হলে বিশ্ববাজারে জ্বালানি সংকট আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নদীবন্দর/এএস