ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আদালত অবমাননার মামলায় ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই মামলায় গাইবান্ধার আওয়ামী লীগ নেতা শাকিল আকন্দ বুলবুলের দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (০২ জুলাই) দুপুরে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।
ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
ভারতে পালিয়ে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাধিকবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারকার্য নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেন, যেগুলো বিচারাধীন মামলার বিষয়ে ছিল। এ ছাড়া তিনি কয়েকটি টকশো এবং দলীয় সভায় বিচারকদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।
পরে ‘২২৬ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’, অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া এমন একটি অডিওর বক্তব্য শেখ হাসিনার উল্লেখ করে তিনিসহ দুজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। মামলার অপর আসামি হলেন গাইবান্ধার আওয়ামী লীগ নেতা শাকিল আকন্দ বুলবুল। ৩০ এপ্রিল আদালত অবমাননার এই অভিযোগ দাখিল করা হয়। সেদিন ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গ্রহণ করে ১৫ মের মধ্যে অভিযুক্তদের জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু ওইদিন কোনো জবাব দাখিল না করায় তাদের ২৫ মে ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রসিকিউশন জানায়, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরও শেখ হাসিনা নিজে উপস্থিত হননি কিংবা কোনো আইনজীবীর মাধ্যমে ব্যাখ্যা দেননি। বিজ্ঞপ্তিতে দুজনকে ৩ জুন (আজ) ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়।
এ নিয়ে শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পণের পর বা যেদিন গ্রেপ্তার হবেন, সেদিন থেকে এই সাজা কার্যকর হবে। এই প্রথম কোনো মামলায় শেখ হাসিনাকে সাজা দিলেন বাংলাদেশের কোনো আদালত। দেশের পট পরিবর্তনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এটাই প্রথম সাজার রায়।
নদীবন্দর/ইপিটি