দেশের আধুনিক ভাস্কর্যশিল্পের অন্যতম কিংবদন্তি, একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পী হামিদুজ্জামান খান আর নেই। রোববার (২০ জুলাই) সকালে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ১৫ জুলাই শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাকে মাদানী এভিনিউয়ের ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নিউমোনিয়া ও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দ্রুত তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। প্রথমে তাকে আইসিইউতে এবং পরে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। তবে আজ সকাল ১০টার পর চিকিৎসকরা লাইফ সাপোর্ট খুলে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এ বিষয়ে ইউনাইটেড হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার ডা. মো. ফজলেরাব্বী খান মৃত্যু সংবাদটি নিশ্চিত করেছেন।
হামিদুজ্জামান খান দেশের ভাস্কর্যশিল্পে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন। তার সৃষ্টি জাগ্রত বাংলা, সংশপ্তক, বিজয় কেতন এবং স্বাধীনতা চিরন্তন আজও শিল্পপ্রেমীদের হৃদয়ে জীবিত। শুধু ভাস্কর্যই নয়, তিনি জলরঙ, তেলরঙ, অ্যাক্রিলিক এবং স্কেচেও দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ের বাংলাদেশে তার শিল্পচর্চায় পাখি ছিল অন্যতম প্রিয় প্রতীক।
১৯৪৬ সালের ১৬ মার্চ কিশোরগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন হামিদুজ্জামান খান। তার জীবনে ২০০টিরও বেশি ভাস্কর্য নির্মিত হয়েছে, আর একক প্রদর্শনী করেছেন ৪৭টি। তার অবদানের জন্য ২০০৬ সালে তিনি একুশে পদকে ভূষিত হন, এবং ২০২২ সালে বাংলা একাডেমির ফেলো হিসেবে নির্বাচিত হন।
হামিদুজ্জামান খানের মৃত্যু দেশের শিল্প ও সংস্কৃতি জগতে এক বিরাট শূন্যতার সৃষ্টি করেছে। বহু গুণমুগ্ধ শিল্পী, ছাত্র এবং অনুরাগী তার অবদান চিরকাল মনে রাখবে।
নদীবন্দর/জেএস