ইরানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় সিস্তান-বালুচিস্তান প্রদেশের একটি আদালত ভবনে গ্রেনেড হামলায় কমপক্ষে পাঁচজন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ১৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্টীয় গণমাধ্যম। এছাড়া নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ৩ জন হামলাকারী নিহত হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনা জানিয়েছে, শনিবার (২৬ জুলাই) সিস্তান-বালুচিস্তানের রাজধানী জাহেদানে বন্দুকধারীদের ছোড়া গ্রেনেড হামলায় নিহতদের মধ্যে একজন মা ও শিশুও রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা।
ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) আঞ্চলিক সদর দফতরের বরাতে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, হামলার পর পরই তৎপর হয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা এবং তাদের গুলিতে ৩ জন হামলাকারী নিহত হয়েছে।
এদিকে পাকিস্তান-ভিত্তিক (ইরানেও সক্রিয়) বালুচ সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘জইশ আল-আদল’ তাদের টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে হামলার দায় স্বীকার করেছে। একই সঙ্গে এ অঞ্চলের সকল বেসামরিক নাগরিককে তাদের নিরাপত্তার জন্য অবিলম্বে এলাকা ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে গোষ্ঠীটি।
সিস্তান-বালুচিস্তানের ডেপুটি পুলিশ কমান্ডার আলিরেজা দালিরি জানিয়েছেন, হামলাকারীরা দর্শনার্থীর ছদ্মবেশে আদালত ভবনে প্রবেশ করেছিল। হতাহতদের মধ্যে বেসামরিক নাগরিক ছাড়াও বিচার বিভাগের এবং নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বেশ কয়েকজন কর্মীও রয়েছেন।
রাজধানী তেহরানের প্রায় ১২০০ কিলোমিটার (৭৪৫ মাইল) দক্ষিণ-পূর্বে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তে অবস্থিত সিস্তান-বালুচিস্তান ইরানের সুন্নি মুসলিম বালুচ সংখ্যালঘুদের আবাসস্থল, যারা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে যে, তারা অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত।
এই প্রদেশে ইরানি নিরাপত্তা বাহিনী, যার মধ্যে আইআরজিসিও অন্তর্ভুক্ত এবং বেলুচ সংখ্যালঘু ও সুন্নি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষ ঘটে। গত অক্টোবরে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ১০ জন ইরানের পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন।
সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর দাবি, তারা তাদের বৃহত্তর অধিকার এবং স্বায়ত্তশাসনের জন্য লড়াই করছে। ইরান সরকার কিছু গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শত্রু দেশের সরকারের মদদে আক্রমণ চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করেছে।
নদীবন্দর/এএস