তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করলেও প্লাবনের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মেলেনি নদীপাড়ের মানুষদের। সোমবার (৪ আগস্ট) সকাল ৯টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এর আগে রোববার (৩ আগস্ট) সকাল ৬টায় পানি ছিল বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচে, সকাল ৯টায় তা বিপৎসীমায় পৌঁছে যায়। এরপর দুপুরে তা ৫ সেন্টিমিটার ওপরে উঠে। তবে রাতের পর থেকে পানি কমতে শুরু করেছে।
তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী ও গয়াবাড়ী এবং জলঢাকার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে ৮-১০ হাজার পরিবারের বাড়িঘরে পানি ঢোকার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন বলেন, ১০টি চরগ্রামের মানুষ আতঙ্কে আছেন। খগাখাড়িবাড়ির বাইশপুকুর গ্রাম ইতোমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে।
পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বলেন, এই ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় চর ঝাড়সিংশ্বরসহ বিভিন্ন চরগ্রামে পানি ঢুকেছে। ফসলি জমি ও বীজতলা তলিয়ে গেছে।
ডালিয়া ব্যারাজের ভাটিতে থাকা লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা ও কালিগঞ্জ উপজেলার চর ও গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে। বাড়িঘরে হাঁটুসমান পানি উঠেছে। মানুষজন পরিবার-পরিজন নিয়ে উঁচু জায়গায় সরে গেছেন।
এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (বাপাউবো) জানায়, রংপুর বিভাগের ধরলা নদীর পানি বাড়ছে, দুধকুমার স্থিতিশীল। তিস্তার পানি আপাতত কমলেও আগামী তিন দিনের মধ্যে আবারও বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এতে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চলে নতুন করে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, উজানে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীতে বন্যা দেখা দিয়েছে। রোববার দুপুর ১২টার দিকে পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বর্তমানে তিস্তার পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে। পানি সামাল দিতে ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইসগেট (জলকপাট) খুলে রাখা হয়েছে। আমরা সতর্কাবস্থায় আছি।
নদীবন্দর/জেএস