তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে পুনঃপ্রবর্তনের দাবিতে করা রিভিউ (রায় পুনর্বিবেচনা) আবেদনের শুনানি আগামী ২৬ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ সংক্রান্ত আদেশ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) অনুষ্ঠিত এক প্রাথমিক শুনানিতে এই দিন ধার্য করা হয়। গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটকারীদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
তিনি জানান, ওইদিন আপিল বিভাগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের ওপর শুনানি হবে।
এর আগে, ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর এই রিভিউ আবেদনটি দায়ের করা হয় এবং পরবর্তীতে ১৯ জানুয়ারি আপিল বিভাগে তার প্রথম দফার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
শুনানিতে রিভিউ আবেদনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, শরীফ ভূঁইয়া এবং শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
এই রিভিউ আবেদনের পেছনে অন্যতম উদ্যোক্তা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি ২০২৩ সালের ১৬ অক্টোবর ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন।
এর আগেও, এই বিষয়ে পৃথকভাবে রিভিউ আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। সবগুলো আবেদন একত্রে শুনানি হবে বলে আদালত জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাটি যুক্ত হয় সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। পরে, ২০০৮ সালে এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন।
দীর্ঘ শুনানির পর ২০১১ সালের ১০ মে, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ত্রয়োদশ সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়। একই বছরের ৩ জুলাই, সংশোধিত আইন গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।
সম্প্রতি, তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে নতুন করে আইনি বিতর্ক শুরু হয়। ২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর, বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারাকে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে বাতিল ঘোষণা করেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আবার চালু করা যাবে কি না, এই প্রশ্নকে ঘিরেই এখন আদালতের চূড়ান্ত রায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
নদীবন্দর/জেএস