1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
ডাকসু নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ কেন? - Nadibandar.com
বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:১৮ অপরাহ্ন
নদীবন্দর, ঢাকা
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫
  • ২ বার পঠিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রার্থীরা। তারা বলছেন, এটি শুধু অপ্রত্যাশিত নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন ও শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক অধিকার হরণের শামিল।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নির্বাচনের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি প্রবেশমুখে ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসেবে সেনাবাহিনী অবস্থান করবে। প্রয়োজনে সেনাসদস্যরা ক্যাম্পাসেও প্রবেশ করতে পারবেন এবং ভোটগ্রহণ শেষে ফলাফল প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত ভোটকেন্দ্র কর্ডন করে রাখবেন। নিরাপত্তার জন্য তিন স্তরের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রথম স্তরে থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বিএনসিসি সদস্য ও প্রক্টরিয়াল টিম, দ্বিতীয় স্তরে থাকবে পুলিশ, আর তৃতীয় স্তরে থাকবে সেনা মোতায়েন।

এ সিদ্ধান্তের ঘোষণা আসার পরপরই প্রার্থীদের একাংশ তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়। তারা বলছে, ডাকসুর মতো একটি অভ্যন্তরীণ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের কোনো নজির নেই। অতীতে এমনকি সামরিক শাসনামলেও এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

পূর্বে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। তখন তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। সেই প্রেক্ষিতেই আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেনা মোতায়েন সেই প্রতিশ্রুতিরই অংশ।
ভিপি পদপ্রার্থী উমামা ফাতেমা অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কোনো ধরনের আলোচনা করেনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমাদের কারো সঙ্গে কথা না বলেই সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ নির্বাচনে সেনা মোতায়েন সত্যিই লজ্জাজনক।

একই অভিযোগ করেন আরেক ভিপি প্রার্থী সাদিক কায়েম। তিনি বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত একতরফা। প্রার্থীদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সেনা মোতায়েনের বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ডাকসুর সাবেক নেতারাও। সাবেক ভিপি ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সত্তর ও আশির দশকে সামরিক শাসনের মধ্যেও ডাকসু নির্বাচন হয়েছে, কিন্তু কখনো ক্যাম্পাসে সেনা মোতায়েনের ঘটনা ঘটেনি। এমনকি পুলিশের উপস্থিতিও সীমিত রাখা হতো। এখন কেন এমন সিদ্ধান্ত?

আশির দশকে ডাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুশতাক হোসেনও সেনা মোতায়েনের বিরোধিতা করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার দায়িত্ব প্রশাসনের। অতীতে সেনাবাহিনী ছাড়াই ডাকসু নির্বাচন হয়েছে। এবারও সেনা মোতায়েনের মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। সেনা উপস্থিতি বরং অস্থিরতা বাড়িয়ে দিতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ডাকসু নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, পূর্বে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। তখন তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। সেই প্রেক্ষিতেই আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেনা মোতায়েন সেই প্রতিশ্রুতিরই অংশ।

তবে তিনি এটাও বলেন, শিক্ষার্থীরা যদি মনে করেন সেনা মোতায়েনের প্রয়োজন নেই, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে।

সত্তর ও আশির দশকে সামরিক শাসনের মধ্যেও ডাকসু নির্বাচন হয়েছে, কিন্তু কখনো ক্যাম্পাসে সেনা মোতায়েনের ঘটনা ঘটেনি। এমনকি পুলিশের উপস্থিতিও সীমিত রাখা হতো। এখন কেন এমন সিদ্ধান্ত?

এদিকে মঙ্গলবার নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে প্রার্থীদের সঙ্গে নিরাপত্তা পরিকল্পনা ভাগাভাগি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বৈঠকে জানানো হয়, ভোটের দিন ক্যাম্পাস পুরোপুরি সিলগালা থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ শিক্ষার্থী, অনুমোদিত সাংবাদিক এবং নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যতীত কেউ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে না। নির্বাচনের আগের দিন ও নির্বাচনের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেট্রো স্টেশন বন্ধ থাকবে।

নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে থেকেই আবাসিক হলে বহিরাগত থাকার ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হবে। নিয়মিত টহলের মাধ্যমে এই বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। তবে ছাত্রীদের হলগুলোতে বহিরাগতদের প্রবেশ কখনোই অনুমোদিত নয়, বলেও জানানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ক্যাম্পাসের বাইরে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য বাড়তি বাসের ব্যবস্থা থাকবে। এসব বাস যাতে নির্বিঘ্নে চলতে পারে, সেজন্য পুলিশের সহযোগিতা নেওয়া হবে।

তবে প্রার্থীরা বলছেন, সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে কেউ আপত্তি করেননি, এটি সত্য নয়। স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী উমামা ফাতেমা বলেন, আমরা আলোচনার মাধ্যমে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চেয়েছিলাম। কিন্তু সেনা মোতায়েনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কারো মত নেওয়া হয়নি। আমরা এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানাই এবং চাই এটি দ্রুত প্রত্যাহার করা হোক।

সূত্র: বিবিসি

নদীবন্দর/এএস

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com