প্রবীণ বামপন্থী রাজনীতিক, লেখক, গবেষক ও বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর আর নেই। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ৫ মিনিটে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম লালা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আজ অসুস্থ অবস্থায় বাসা থেকে স্পেশালাইজড হাসপাতালে আনার পর সকাল ১০টা ৫ মিনিটে তার মৃত্যু হয়। বিস্তারিত আমরা পরে জানাতে পারবো।’
বদরুদ্দীন উমরের জন্ম ( ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার এক উচ্চবিত্ত পরিবারে। বাবা বিখ্যাত রাজনীতিবিদ আবুল হাশিম, অবিভক্ত বাংলায় মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। যিনি ১৯৪৭ সালে কংগ্রেস নেতা শরৎ বসুর সঙ্গে মিলে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ গড়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এ প্রক্রিয়ায় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, কিরণশঙ্কর রায় প্রমুখ যুক্ত হয়েছিলেন। তাঁর পিতামহ ছিলেন বিখ্যাত রাজনীতিবিদ ও বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য আবুল কাশেম। বর্ধমানের এই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন কংগ্রেস, মুসলিম লীগ ও কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য। তাদের বাড়িতে উপমহাদেশের বরেণ্য রাজনীতিবিদরা আসতেন। এমনই রাজনৈতিক পরিবেশে বদরুদ্দীন উমরের বেড়ে ওঠা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে পেশাজীবন শুরু করা বদরুদ্দীন উমর পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। সমাজ বিপ্লবের স্বপ্ন বুকে নিয়ে ১৯৬৮ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার চাকরি ছেড়ে সার্বক্ষণিক লেখালেখিতে নিয়োজিত হন তিনি। ’৬৯ সালে পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টিতে (মার্ক্সবাদ-লেলিনবাদ) যোগ দেন। ১৯৭০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ’৭১ সালের মার্চ পর্যন্ত পার্টির মুখপত্র গণশক্তি সম্পাদনা করেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পার্টির লাইনের বিরোধিতা করে পার্টিতে পরপর দুটি দলিল প্রদান করেন বদরুদ্দীন উমর। ডিসেম্বরে মতাদর্শিক কারণে ইপিসিপি থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর থেকে কমিউনিস্ট ভাবাদর্শের প্রসার ও নেতৃত্ব গড়ে তোলার কাজে ব্যাপৃত। তিনি বাংলাদেশ লেখক শিবির, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোট প্রভৃতি সংগঠনের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।
নদীবন্দর/জেএস