1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
মাহির-বর্ষার প্রেমের ছুরিতে শেষ ছাত্রদল নেতা জোবায়েদের জীবন! - Nadibandar.com
রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৫৪ অপরাহ্ন
নদীবন্দর, ঢাকা
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৫
  • ১৯ বার পঠিত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইনের মৃত্যু ঘিরে উঠেছে নানা প্রশ্ন। পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় টিউশনিতে গিয়ে তিনি নির্মমভাবে খুন হন। এই ঘটনায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর প্রেমঘটিত তথ্য, যা এখন পুলিশি তদন্তের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।

নিহত জোবায়েদ ছিলেন ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। পাশাপাশি তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সভাপতি এবং জবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। গত এক বছর ধরে তিনি পুরান ঢাকার নূরবক্স লেনের ‘রৌশান ভিলা’ নামের একটি বাসায় বর্ষা নামের এক ছাত্রীকে ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি ও বায়োলজি বিষয় পড়াতেন। এ ছাত্রীর বাবার নাম গিয়াসউদ্দিন। সেই বাসারই তিন তলায় গত রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে জোবায়েদকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে সিঁড়ির উপর উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। তিন তলার সিঁড়ি থেকে নিচ পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিলো রক্ত।

এই ঘটনায় পুলিশ প্রাথমিকভাবে যে তথ্য পেয়েছে তা অনুযায়ী, জোবায়েদের এই মৃত্যু কোনো পারিবারিক দ্বন্দ্ব বা ছিনতাই নয়, বরং এটি প্রেমঘটিত দ্বন্দ্বের জের ধরে ঘটে থাকতে পারে।

পুলিশ জানিয়েছে, বর্ষা ও মাহির রহমান নামের এক যুবকের মধ্যে দীর্ঘ ৯ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মাহির বুরহান উদ্দিন কলেজের শিক্ষার্থী এবং বর্ষা ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজে দ্বিতীয় বর্ষে পড়েন। ছোটবেলা থেকেই তারা পাশাপাশি বাড়িতে বড় হয়েছেন এবং তাদের সম্পর্ক চতুর্থ শ্রেণি থেকে গড়ে ওঠে।

কিন্তু কিছুদিন আগে বর্ষা মাহিরকে জানায়, সে তার টিউটর জোবায়েদকে পছন্দ করতে শুরু করেছে। যদিও পুলিশ নিশ্চিত করেছে, জোবায়েদ ও বর্ষার মধ্যে কোনো প্রেমের সম্পর্ক ছিল না এবং কোনো প্রকার প্রেমমূলক বার্তা বা আলাপ পাওয়া যায়নি। এরপরও বর্ষার এই কথায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে মাহির। পুলিশের ধারণা, মাহির তার এক বন্ধু নাফিসকে সঙ্গে নিয়ে রাগের বশে জোবায়েদকে হত্যা করে থাকতে পারে।

এই ঘটনার পর পুলিশ বর্ষাকে রোববার রাত ১১টার দিকে তার বাসা থেকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, জিজ্ঞাসাবাদে বর্ষা স্বীকার করেছে, সে মাহিরকে জোবায়েদকে পছন্দ করার কথা বলেছিল, তবে খুনের বিষয়ে সে কিছু জানে না। বর্ষাকে জিজ্ঞাসাবাদে স্বাভাবিক ও চিন্তামুক্ত দেখা গেছে বলেও জানান ওসি।

এদিকে জোবায়েদের বন্ধু সৈকতের সঙ্গে বর্ষার ফেসবুকে পরিচয় ছিল। এই সৈকতই তাকে প্রথম মৃত্যুর খবরটি জানায় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ঘটনার পরপরই জোবায়েদের পরিবার মামলা করতে থানায় উপস্থিত হয়। রাত ১টা থেকে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চেষ্টা করেও তারা মামলা করতে পারেনি। নিহতের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত জানান, তারা ছাত্রী বর্ষা, তার বাবা-মা, প্রেমিক মাহির ও তার বন্ধু নাফিসের নাম উল্লেখ করে মামলা করতে চাইলেও বংশাল থানার ওসি তা নিতে অস্বীকৃতি জানান। ওসি বলেন, এতজনের নামে মামলা না দিলে ভালো হয় এবং মামলায় ছাত্রী বর্ষার বাবা-মায়ের নাম রাখলে মামলা দুর্বল হয়ে যেতে পারে। তবে জোবায়েদের পরিবারের দাবি, যাদের ভূমিকা রয়েছে, সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে।

এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। জোবায়েদের সহপাঠীরা বংশাল থানার সামনে বিক্ষোভ করে এবং তাতীবাজার মোড় অবরোধ করে রাখে। তারা দ্রুত আসামিদের গ্রেফতারের দাবি জানায়।

অন্যদিকে, বংশাল থানার ওসি জানিয়েছেন, পুলিশ তদন্ত করছে এবং অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চলছে। তিনি বলেন, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তদন্ত করে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে এখনো পর্যন্ত মাহির ও তার বন্ধু নাফিসকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

নদীবন্দর/জেএস

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com