ফসলি জমির মাটি কেটে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চলছে বেশিরভাগ ইটভাটা। এতে একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, তেমনি কমছে ফসল উৎপাদন। এসব ভাটার বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করা হলেও, প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, জেলায় ১৮৯টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৮১টি ভাটা পরিবেশ আইন মেনে চলছে। বাকিগুলোর কোনটির-ই ছাড়পত্র নেই। সদর উপজেলা, সরাইল, নাসিরনগর, আশুগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে এসব ইটভাটার মাটি নেয়া হচ্ছে ফসলি জমি থেকে।
এতে করে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয়রা জানান, ‘এখানে কৃষি জমি বিপন্ন ও পানি প্রবাহ নষ্ট করে মাটি কাটা হচ্ছে। যে হারে ইটভাটা বাড়ছে তাতে খাদ্য সংকটও দেখা দিতে পারে। জোরপূর্বক কৃষি জমির উপর দিয়ে ট্রাক্ট চালানো হচ্ছে।’
তবে ভাটা মালিকরা বলছেন, ‘জমির মালিকের সম্মতিতে আমরা মাটি নিচ্ছি। আগে তাদেরকে টাকা দিয়ে তারপর মাটি কাটা হচ্ছে।’
কৃষকরা জানান, একবার জমি থেকে মাটি কাটা হলে ৪ থেকে ৫ বছর ওই জমিতে আর ফসল ফলানো যায় না। আর জমির উপরিভাগের মাটি বিক্রি আইনত নিষিদ্ধ হলেও, ভাটা মালিকদের ফাঁদে পা দিয়েছেন অনেকেই।
তারা জানান, ‘জমির মাটি কাটায় আর তেমন ফসল করা যাচ্ছে না। হাজার হাজার একর জমি নষ্ট হচ্ছে। জমির উর্ববরতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ফসল কম হচ্ছে।’
জানতে চাইলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. রবিউল হক মজুমদার বলেন, ‘জমির উপরিভাগের মাটি সরিয়ে নিলে উর্বরতা হ্রাস পায়। এছাড়া ইটভাটা থেকে কার্বন নিঃস্বরণে আশেপাশের ফসলি জমি ও বিভিন্ন গাছের ক্ষতি হয়। সর্বোপরি আমাদের বায়ুমন্ডলের খুব বড় ক্ষতি হয়।’
ছাড়পত্র না থাকায় ২০২০ সালে ৮৬টি ইটভাটাকে জরিমানা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নূরুল আমিন। তিনি বলেন, ‘জেলা আমরা ২১টি ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করেছি। এতে সাড়ে ৭৭ লাখ টাকার বেশি জরিমানা করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
ফসলি জমি থেকে মাটি কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি জনসচেতনতা বাড়ানোরও পরামর্শ পরিবেশ অধিদপ্তরের।
নদী বন্দর / পিকে