কিশোরগঞ্জের হাওরে আগাম বন্যা থেকে বোরো ধান রক্ষায় নির্মাণ করা হচ্ছে ৫৪টি নতুন ফসলরক্ষা বাঁধ। এতে করে আগাম বন্যা থেকে জমির ফসল রক্ষা পাবে বলে আশা করছেন কৃষকরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, বাঁধ নির্মাণে কোনো গাফিলতি হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর বন্যার সম্ভাব্য ক্ষতি থেকে ফসল রক্ষায় হাওরের চারপাশে বেষ্টনি তৈরি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এমপি।
হাওরে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে এখন কেবলই সবুজের সমারোহ। কিছুদিন পরই সবুজ ধান রঙ বদলে ধারণ করবে সোনালী রঙ। তবে আগাম বন্যায় জমির ফসল সঠিক সময়ে ঘরে তুলতে পারবেন কিনা এ নিয়ে প্রতি বছরই দেখা দেয় আশঙ্কা।
আগাম বন্যার হাত থেকে হাওরের ফসল রক্ষা করতে জেলার ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামসহ কয়েকটি উপজেলায় নির্মাণ করা হচ্ছে ৫৪টি নতুন বাঁধ। আগের বাঁধগুলো সংস্কারের পাশাপাশি নতুন বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়ায় অনেকটা আশঙ্কামুক্ত হাওরের কৃষকরা। সঠিক সময়ে বাঁধগুলোর নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে আশা তাদের।
হাওরে ফসলরক্ষা বাঁধগুলো সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা সেটি দেখতে ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলায় সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল মতিন সরকারের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটি দল। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ময়মনসিংহ পৌর সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. শাহজাহান সিরাজ, কিশোরগঞ্জ জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মতিউর রহমান, কিশোরগঞ্জের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কামরুল হাসান, মিঠামইন শাখা কর্মকর্তা জোবায়েরসহ অন্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বাঁধ নির্মাণে কোনো প্রকার গাফিলতি সহ্য করা হবে না বলে হুঁশিয়ার করেন প্রধান প্রকেীশলী। তিনি বলেন, কৃষকদের জমির ওপর দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। তাদেরকে বুঝিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। এজন্য কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। তবে এ মাসের মধ্যে বাঁধের নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের এমপি রাষ্ট্রপতির ছেলে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক জানান, আগের বাঁধগুলো মেরামতের পাশাপাশি ৫৪টি নতুন বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। নির্মাণ কাজ তদারকি করা হচ্ছে।
সঠিক সময়ে বাঁধের নির্মাণ কাজ শেষ হবে উল্লেখ করে তিনি জানান, ফসল রক্ষায় হাওরের চারপাশে বেষ্টনি গড়ে তোলা হচ্ছে। তাই আশা করছি আগাম বন্যা হলেও জমিতে পানি ওঠার আগেই কৃষক তার ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে হাওরে ৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬৩.৪৬ কিলোমিটার নতুন ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে ৫০ ভাগ কাজ।
এবার কিশোরগঞ্জে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৯৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে।
নদী বন্দর / এমকে