গাইবান্ধায় প্রায় ঘন্টাব্যাপী কালবৈশাখী ঝড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো দশ জনে। এর মধ্যে গাইবান্ধা সদরে চার, পলাশবাড়ীতে তিন, ফুলছড়িতে দুই ও সুন্দরগঞ্জে এক। গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক মোঃ আব্দুল মতিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শেষ খবর পয়া পর্যন্ত নিহতরা হচ্ছেন গাইবান্ধা সদরের রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের হরিণসিংগা গ্রামের হিরু মিয়ার ছেলে মুনির (৫) , একই ইউনিয়নের আরিফ খান বাসুদেবপুর গ্রামের রিজু মিয়ার স্ত্রী আর্জিনা বেগম (২৮), পলাশবাড়ী উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের কুমেদপুর গ্রামের আবদুল কাদের মিয়ার স্ত্রী মমতা বেগম (৬৪) ও ফুলছড়ি উপজেলার এরেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের ডাকাতিয়ার চর গ্রামের মৃত বারেক মিয়ার ছেলে হাফিজ উদ্দিন (৬৫)।
এছাড়াও পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের বাকেরপাড়া গ্রামের ইউনুছ আলীর স্ত্রী জাহানারা বেগম (৫০) ও একই ইউনিয়নের মোস্তফাপুর গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে আবদুল গফফার (৪২), গাইবান্ধা সদর উপজেলার মালিবাড়ী ইউনিয়নের ঢনঢনিপাড়া গ্রামের মিঠু মিয়ার স্ত্রী সাহারা বেগম (৪১) ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের কিশামত হলদিয়া গ্রামের সোলায়মান আলীর স্ত্রী ময়না বেগম (৪৭) এবং ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের কাতলামারি গ্রামের বিশু মিয়ার স্ত্রী শিমুলি বেগম (২৬)। এ ছাড়া ঝড়ে কাঁচা ঘরবাড়ি ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রবিবার বিকেল তিনটার দিকে হঠাৎ বৃষ্টিহীন কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়। এ সময় পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের ডাকেরপাড়া গ্রামের জাহানারা বেগম বাড়ির উঠানে সাংসারিক কাজ করছিলেন। এক পর্যায়ে বাড়ির একটি গাছ উপড়ে পড়ে। এতে গাছের নিচে চাপা পড়ে জাহানারা ঘটনাস্থলে মারা যান। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে আবদুল গফফার মোস্তফাপুর বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে একটি গাছ উপড়ে তার শরীরের ওপর পড়ে। এতে তিনি চাপা পড়ে ঘটনাস্থলে মারা যান।
জাহানারা বেগমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন পলাশবাড়ী থানার ওসি মো. মাসুদুর রহমান। তিনি বলেন, বেলা সোয়া তিনটার দিকে কিশামত হলদিয়া গ্রামের ময়না বেগম বাড়ির আঙ্গিনায় কাজ করছিলেন। এসময় বাড়ির একটি গাছ ভেঙ্গে পড়লে তিনি এর নিচে চাপা পড়ে মারা যান। ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান গাছ চাপায় ওই নারী নিহত হবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ফুলছড়ি থানার ওসি কাওছার আলী মৃত্যুও কথা নিশ্চিত করেছেন। গাইবান্ধা সদরের ঢনঢনি পাড়ার সাহারা বেগম ঝড় শুরু হলে খড়ি কুড়াতে বাড়ির উঠানে যান। এ সময় গাছের ডাল তার মাথায় ভেঙে পড়ে। এতে তিনি মারা যান। এদিকে ঝড়ে কমপক্ষে শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন ।
এ ছাড়াও ঝড়ে গাইবান্ধা সদর উপজেলার অসংখ্য কাঁচা ঘরবাড়ি ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শহরের প্রাণকেন্দ্রে কয়েকটি গাছ উপড়ে পড়ায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। তবে কি পরিমাণ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা ইদ্রিশ আলী তাৎক্ষনিকভাবে তা জানাতে পারেননি। তিনি বলেন, ঝড়ে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা জরিপ করে দেখা হচ্ছে।
নদী বন্দর / পিকে