শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে বুধবার (১২ মে) সকাল থেকেই উপচেপড়া ভিড়। শিমুলিয়া ঘাট থেকে প্রতিটি ফেরিবোঝাই যাত্রী এসে নামছে বাংলাবাজার ঘাটে। পরে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ছোটবড় বিভিন্ন যানবাহনে গন্তব্যে যাচ্ছেন এসব যাত্রীরা। ঘাটে নেমেই দক্ষিণাঞ্চলেরর যাত্রীদের পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়। উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি।
এই রুটে গত কয়েকদিন ধরে ফেরি বন্ধ থাকায় সোমবার পর্যন্ত দুই পাড়ে ছিল হাজার হাজার যাত্রী আর শত শত পণ্যবাহী ট্রাক। ওইদিন বিকেল থেকে সবগুলো ফেরি চলাচল শুরু হওয়ায় বাংলাবাজার ঘাটে ট্রাক ও প্রাইভেট গাড়ির চাপ নেই। বাস টার্মিনালগুলোও খালি পড়ে আছে। বাংলাবাজার ঘাটে ঢাকামুখী যাত্রীদেরও নেই কোনো চাপ। তাই ফেরিগুলোকে বাংলাবাজার ঘাটে যাত্রী ও পরিবহন নামিয়ে চলে যেতে হচ্ছে শিমুলিয়া প্রান্তে।
ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে শিমুলিয়া ঘাট হয়ে পদ্মা পার হচ্ছেন শতশত যাত্রী। বাংলাবাজার ঘাট থেকে লোকাল বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, থ্রি-হুইলার গাড়ি, মোটরসাইকেলসহ পিকআপ ও ট্রাকে যাত্রীদের গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিতে দেখা গেছে। তবে লোকাল বাসসহ প্রতিটি যানবাহনে গুনতে হচ্ছে দুই থেকে তিনগুণ অতিরিক্ত ভাড়া। যানজট নিয়ন্ত্রণে পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতা দেখা গেলেও যাত্রীদের হয়রানি আর অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।
সরেজমিন ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, শিমুলিয়া থেকে দ্রুতযাত্রী ও পরিবহনবোঝাই ফেরি আসার কারণে বাংলাবাজারের সবগুলো ঘাট প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। এ রুটে ১৬টি ফেরি এখন চলাচল করছে। লঞ্চ ও স্পিডবোট পুরোপুরি বন্ধ থাকার কারণে শুধুমাত্র ফেরিই এখন ভরসা। তবে ফেরিতে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে গাদাগাদি করে পার হচ্ছেন যাত্রীরা। ঘাট এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মানানোর ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চোখে পড়েনি। বাস টার্মিনালগুলোও খালি। বিভিন্ন ছোট ছোট পরিবহনগুলোকে রাখা হয়েছে ঘাট থেকে অনেক দূরে। প্রায় অর্ধ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে যাত্রীদের ওইসব পরিবহনে উঠতে হচ্ছে। এই কারণে বাংলাবাজার ঘাটের কাছাকাছি কোনো ধরনের যানজট নেই।
বরগুনাগামী যাত্রী সামিউল জানান, বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে পর্যাপ্ত ফেরি থাকা সত্ত্বেও প্রচুর ভিড়ের কারণে মানুষ ফেরিতে ঠিকমতো উঠতে পারছে না। স্বল্প সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার লোক থাকলেও তারা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। তিনি বলেন, প্রায় অর্ধলাখ মানুষ ফেরি পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছেন।
বরিশালগামী যাত্রী আফসানা বলেন, ‘সকাল ৭টায় শিমুলিয়া ঘাটে এসেছি। গাদাগাদি করে ফেরি পার হতে হয়েছে। মহিলা মানুষ, নাতি-নাতনিদের নিয়ে লাফালাফি করে ফেরি উঠতে অনেক কষ্ট হয়েছে। গ্রামের বাড়িতে সবাই থাকেন। তাদের ছাড়া ঢাকায় বসে কীভাবে ঈদ করি?’
বিআইডব্লিউটিসি কাঁঠালবাড়ী ঘাট ম্যানেজার মো. সালাউদ্দিন বলেন, আজকে ঈদে ঘরে ফেরা দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের চাপ অনেক বেশি। এ রুটে ১৬টি ফেরি চলাচল করছে। তবে বাংলাবাজার ঘাটে যাত্রীদের তেমন চাপ নেই। তাই ঘরমুখো যাত্রীর চাপ সামাল দিতে ফেরিগুলো বাংলাবাজার ঘাটে যাত্রী ও যানবাহন নামিয়ে খালি ফেরি শিমুলিয়া ঘাটে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।
নদী বন্দর / জিকে