শনিবার রাতে খেলা চলাকালীন মাঠের মধ্যেই লুটিয়ে পড়েছিলেন ডেনমার্কের তারকা মিডফিল্ডার ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেন। ধারণা করা হয়েছে, হার্ট অ্যাটাক করায় ওভাবে মাঠে আছড়ে পড়েন তিনি। সতীর্থ খেলোয়াড় ও দর্শকদের অভিব্যক্তিতে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল, গুরুতর অবস্থা এরিকসেনের।
সবার দুশ্চিন্তা কমানোর খবর মেলে এরিকসেন মাঠ ছেড়ে হাসপাতালে যাওয়ার আগেই। স্ট্রেচারে করে অ্যাম্বুলেন্সের কাছে নেয়ার সময়ই জ্ঞান ফেরে এরিকসেনের, হাত নেড়ে সাড়াও দেন। পরে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, শঙ্কামুক্ত আছেন এরিকসেন। তবে যথাযথ চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাকে।
এদিকে ক্রীড়া বিষয়ক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর সঞ্জয় শর্মার মত, আপাতত সুস্থ হলেও, আর কখনও হয়তো মাঠে ফিরতে পারবেন না এরিকসেন। তিনি আদৌ হার্ট অ্যাটাক করেছেন কি না সে বিষয়েও যথেষ্ঠ সংশয় রয়েছে লন্ডনের সেইন্ট জর্জ ইউনিভার্সিটির ক্রীড়া হৃদরোগের এ বিশেষজ্ঞের।
এরিকসেন যখন টটেনহ্যাম হটস্পারে ছিলেন, তখন তার সঙ্গে কাজ করেছেন এরিকসেন। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই মূলত এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলেছেন সঞ্জয় শর্মা। তার ধারণা, এরিকসেনের শারীরিক অবস্থায় ভয়াবহ কোনো সমস্যা হয়েছে। কিন্তু কী হয়েছে এবং কেনো হয়েছে সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন সঞ্জয়ও।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল স্কাই নিউজকে সঞ্জয় বলেছেন, ‘এটা পরিষ্কার যে, কোথাও একটা ভয়াবহ অসঙ্গতি হয়েছে। এটা ভালো বিষয় যে তারা (মেডিকেল টিম) এরিকসেনের জ্ঞান ফেরাতে পেরেছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কী হয়েছে? কেনোই বা হয়েছে? তার তো ২০১৯ সাল পর্যন্ত সব রিপোর্ট ঠিক ছিল। এটাকে হার্ট অ্যাটাক কীভাবে বলতে পারেন?’
এসময় সঞ্জয় শর্মা একপ্রকার সতর্ক করার মতোই জানান, অন্তত ইংল্যান্ডে হলে এরিকসেনকে আর মাঠে ফেরার অনুমতি দেয়া হতো না। তবে এরিকসেন এখন খেলেন ইতালির ক্লাব ইন্টার মিলানে। সেখানেও পেশাদার পর্যায়ে এরিকসেন আবার খেলতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে সঞ্জয়ের।
তিনি বলেছেন, ‘তার এই হার্ট অ্যাটাক পুরো দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এটা অনেক মানুষকেই মানসিকভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে। তবু ভালো বিষয় হলো, এরিকসেন বেঁচে আছে। কিন্তু খারাপ খবর হলো, সে তার ক্যারিয়ারের শেষ দিকে ছিল। তো এখন সে আরেকটি পেশাদার ম্যাচ খেলতে পারবে কি না, তা আমি জানি না। ইংল্যান্ডে হলে আমরা তাকে খেলতে দিতাম না।’
হাসপাতালে নেয়ার আগেই এরিকসেনের জ্ঞান ফেরাটা খুব ভালো একটি দিক ছিল বলে মন্তব্য করেছেন সঞ্জয়। সংবাদ সংস্থা পিএ’কে তিনি বলেছেন, ‘এখানে মূল বিষয় হলো সে স্থিতিশীল আছে এবং জেগে আছে। এটা খুব ভালো।’
তবে এরিকসেনকে আবার মাঠে নামতে দেয়ার পক্ষে নন সঞ্জয়। তিনি কড়া ভাষায় বলেছেন, ‘আমি জানি না, সে আবার ফুটবল খেলতে পারবে কি না। আজকে (শনিবার) কিন্তু সে প্রায় মারা গিয়েছিল, হয়তো কয়েক মিনিটের জন্য কিন্তু এটি হয়েছিল। মেডিকেল টিম কি আবার তাকে এভাবে মরতে দেবে? উত্তর হলো, না।’
নদী বন্দর / জিকে