রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার জনস্বাস্থ্য ও উন্নয়নের অন্যতম অন্তরায়। তামাক সেবন ও ধূমপানের ফলে হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, হাঁপানিসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে বছরে পৃথিবীতে ৮০ লক্ষাধিক এবং বাংলাদেশে ১ লাখ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ মারা যায়। এছাড়া ধূমপানকে বলা হয় মাদক সেবনের প্রবেশ পথ।
তিনি বলেন, তামাক সেবন ও ধূমপানের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম মাদকের দিকে ধাবিত হয়ে পরিবার ও রাষ্ট্রের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ জনস্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণা অনুযায়ী কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ধূমপায়ীদের মৃত্যু ঝুঁকি অনেক বেশি। ফলে তামাক ও ধূমপান বর্জন কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) ‘বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস’ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০২১ পালনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। তামাক বর্জন করার ক্ষেত্রে মানসিক দৃঢ়তা খুবই জরুরি। এ বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক নির্ধারিত এ বছরের বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের প্রতিপাদ্য ‘Commit to quit’ – যার ভাবানুবাদ ‘আসুন আমরা প্রতিজ্ঞা করি, জীবন বাঁচাতে তামাক ছাড়ি’ অত্যন্ত যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।
আবদুল হামিদ বলেছেন, সরকার জনস্বাস্থ্যকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ সংশোধন এবং ২০১৫ সালে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা’ প্রণয়ন করেছে। এতে তামাকজাত দ্রব্যের সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা, পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহণে ধূমপান এবং ১৮ বছরের নিচের শিশুদের কাছে বা তাদের দ্বারা তামাকজাত দ্রব্যের ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিধিমালার সঠিক বাস্তবায়ন নিশ্চিত করাসহ তামাক ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করতে সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সচেতন নাগরিক সমাজ, তামাকবিরোধী সংগঠন ও গণমাধ্যমগুলোর সমন্বিত প্রয়াস অত্যন্ত জরুরি বলে আমি মনে করি।
তিনি আরও বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা একটি তামাক ও ধূমপানমুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে সক্ষম হবো– এ প্রত্যাশা করি। আমি ‘বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০২১’ উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সফলতা কামনা করছি।
নদী বন্দর / এমকে