1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
বাঁকখালীর ভাঙনে দিশাহারা তীরের বাসিন্দারা - Nadibandar.com
রবিবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০৫ পূর্বাহ্ন
কক্সবাজার প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৫ বার পঠিত

কক্সবাজরের রামুতে বাঁকখালী নদীর ভাঙনে তীরবর্তী একটি গ্রাম বিলীনের উপক্রম হয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে নদী তীরের ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে সামনের বর্ষায় সাত শতাধিক বসতবাড়ি, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে তলিয়ে যাবে। এতে কয়েক হাজার মানুষ উদবাস্তু হতে পারে বলে আশংকা করছেন স্থানীয়রা। বিপদের মুখে থাকা রামুর কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রামবাসী ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নিতে সরকারে সুদৃষ্টি কামনা করেন।

সূত্রমতে, প্রাচীনকালে পার্বত্য অঞ্চলের কালো পাহাড়ের পাদদেশ থেকে সৃষ্ট বাঁকখালী নদী। শত কিলোমিটার দীর্ঘ নদীটি পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়ি, রামু ও কক্সবাজার সদর উপজেলার বুক চিরে এঁকে বেঁকে কক্সবাজার পৌর এলাকায় এসে বঙ্গোপসাগরে মিলেছে। এ নদীর তীর ঘেঁষে চাষাবাদের সুবিধার্থে গড়ে উঠেছে অসংখ্য গ্রাম।

গ্রীষ্মে চাষাবাদে সুবিধা দিলেও বর্ষায় বাঁকখালীর দু’পাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বাস অধিবাসীদের। রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি আঞ্চলিক সীমান্ত সড়কের বিশাল অংশ এ নদীর তীর। নদীভাঙনে বিভিন্ন স্থানে শত শত পরিবার ঘরহারা হয়েছে। প্রতিবছর বর্ষায় পাহাড়ি ঢল ও বন্যায় নদীর একেক অংশ ভাঙনের কবলে পড়ছে।

রামুর কাউয়ারখোপ পূর্বপাড়ার বাসিন্দা কাজী এম. আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, ২০১২ সালের বন্যায় পূর্ব কাউয়ারখোপ মরহুম আবুল বশর সওদাগরের ঘাটা থেকে আইরাবাপের ঘাটা পর্যন্ত বাঁকখালীর পাড় ভাঙনের কবলে পড়ে। বিষয়টি জেনে তৎকালীন সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজল ভাঙন পরিদর্শন করে জরুরি ভিত্তিতে দুটি বল্লি স্পার স্থাপন করে ভাঙন হ্রাসের ব্যবস্থা করেন।

কিন্তু আর কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় ২০১৮ সালের বন্যার পর ওই স্থানে ফের ভাঙন শুরু হয়। সদ্যাগত বর্ষায় লাগাতার পাহাড়ি ঢল ও বন্যায় নদী ভাঙন প্রকট হয়ে নদীপাড়ের বাঁশঝাড়সহ প্রায় দেড় হাজার ফুট তলিয়ে গেছে। এতে পূর্ব কাউয়ারখোপ লামার পাড়ার ৭ শতাধিক বসতি হুমকির মুখে পড়েছে।

কাউয়ারখোপ ইউপির স্থানীয় মেম্বার (সদস্য) মুহাম্মদ হাসান তালুকদার জানান, এক দশক আগে থেকে ভাঙন রোধে নদীর কোনো কোনো স্থানে সরকারিভাবে ব্লক বসানো হয়। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। গত কয়েক বছর স্রোতের গতি কমে ভাঙছে কাউয়ারখোপের পূর্বপাড়া এলাকাটি।

এলাকা রক্ষায় নদীর তীরে লাগানো বাঁশঝাড় এরইমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বাকি থাকা বাঁশঝাড় তলিয়ে গেলে নদীর করাল গ্রাসে পড়বে গ্রামটি। এতে সাত শতাধিক পাকা, আধাপাকা ও কাঁচাবাড়ির পাশাপাশি শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে হারিয়ে যেতে পারে।

সমাজকর্মী জাফর আলম বলেন, শত বছর ধরে বাঁকখালীর উভয় তীরে হাজার হাজার পরিবারের বাস। এঁকে-বেঁকে চলা বাঁকখালী প্রতিবছরই কাউকে না কাউকে নিঃস্ব করে ছাড়ছে। এখন পূর্বপাড়ার মতো আরও কয়েকটি পাড়ার বাসিন্দারা বসতবাড়ি ও সহায় সম্বল হারানোর ভয়ে উদ্বিগ্নতায় দিনাতিপাত করছে।

কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান শামশুল আলম বলেন, নদীভাঙন স্থল থেকে রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত সড়কের অবস্থান এখন মাত্র ৩০ ফুট দূরত্বে। সড়কের মতো পূর্বপাড়াসহ আরও কয়েকটি স্থানের কালভার্ট এবং নানা স্থাপনা তলিয়ে যাওয়ার আশংকায় সদ্য বন্যার পর উপজেলায় লিখিত জানানো হয়েছে।

কিন্তু এরপর থেকে কোনো বৈঠক হয়নি। তাই এখনো কোনো বরাদ্দ আসেনি। শুষ্ক মৌসুমে ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া না হলে গ্রামটি নদীতে বিলীন হয়ে সড়কটিও ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, ভাঙনের বিষয়ে জেনেছি। বরাদ্দের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লেখা হয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে ব্যবস্থা নেওয়ার তোড়জোড় চালানো হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ বলেন, চলতি বছর বৃষ্টি ও বন্যা বেশি হয়েছে। এতে বাঁকখালী নদীর বিভিন্ন বাঁকে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। গতি পরিবর্তন করা নদীর ধর্ম। খবর পেয়ে আমরা পরিদর্শন করেছি।

ঝুঁকি এড়াতে দ্রুত মেরামতে বরাদ্দের আবেদন করা হলেও এখনো কোনো সাড়া আসেনি। তবে বিআইডাব্লিউটিএ দ্রুত নদী ড্রেজিংয়ে হাত দেবে বলে জেনেছি। এমনটি হয়ে থাকলে তীর ভাঙন কিছুটা রদ হবে বলে আশা করা যায়।

নদী বন্দর/এসএইচ

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com