ফরিদপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মুনজুর হোসেন বুলবুলের ২০২০-২১ অর্থবছরে কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) প্রকল্পের রাস্তা নির্মাণ কাজে শ্রমিকের পরিবর্তে ভেকু দিয়ে কাজ করার অভিযোগ উঠেছে।
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান মোল্যা এবং ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও প্রকল্পের সভাপতি আলাউদ্দিন মাতুব্বরের যোগসাজশে এ ধরনের অনিয়ম করা হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সাতৈর ইউনিয়নের রামদিয়া এলাকায় রামদিয়া ভিটা থেকে দড়ি রামদিয়া মুকাশেরের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের জন্য ২ লাখ টাকার প্রকল্প বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রকল্পের সভাপতি, ইউপি সদস্য মো. আলাউদ্দিন মাতুব্বর মাস খানেক আগে পুরো কাজ কোনোমতে শেষ করে প্রকল্পের বরাদ্দের প্রথম কিস্তির টাকা (৬৬ হাজার) উত্তোলন করেন।
টাকা উত্তোলন করে শ্রমিকের পরিবর্তে ভেকুর মালিকের সঙ্গে টাকার বিনিময়ে চুক্তি করে বৃষ্টিবাদলের মধ্যে তড়িঘড়ি করে প্রকল্পের সম্পূর্ণ কাজ শেষ করেন। তবে এই প্রকল্পের দ্বিতীয় ও তৃতীয় কিস্তির টাকা উত্তোলন করা হয়নি।
এ বিষয়ে কাদিরদী গ্রামের বাসিন্দা ভেকুর মালিক লিয়াকত হোসেন বলেন, ‘সাতৈরের পুড়া রামদিয়া গ্রামের মাটির একটি রাস্তা করার জন্য সাতৈর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান আমার সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন। যদিও বৃষ্টিবাদল তারপরও ওই রাস্তার সম্পূর্ণ কাজ সপ্তাখানেকের মধ্যে ভেকু দিয়ে কেটে শেষ করে দিয়েছি। এছাড়া চেয়ারম্যানের আরও অনেক রাস্তার কাজ আমি ভেকু দিয়ে করে থাকি।’
প্রকল্পের সভাপতি ও ইউপি সদস্য মো. আলাউদ্দিন মাতুব্বর বলেন, ‘আমি প্রকল্পের সভাপতি হিসেবে প্রকল্পের ২ লাখ টাকার মধ্যে প্রথম কিস্তির ১ লাখ টাকা উত্তোলন করেছি। সেই টাকা দিয়ে প্রকল্পের সম্পূর্ণ কাজ ভেকু দিয়ে শেষ করেছি।’
কাজের বিনিময়ে খাদ্য প্রকল্পের কাজ শ্রমিকদের দিয়ে না করিয়ে ভেকু দিয়ে করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কিছু জানি না, সবকিছু জানে আমাদের ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর ভাই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাতৈর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান মোল্যা বলেন, ‘ভেকু দিয়ে মাটি কাটার কোনো নিয়ম নেই তা ঠিক। এখন শ্রমিক পাওয়া যায় না। শ্রমিক না পাওয়ার কারণে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে রাস্তা করা হয়েছে।’
ভেকু দিয়ে মাটি কাটতে কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমতি নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি।’
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রণব পান্ডে বলেন, ‘ভেকু দিয়ে কাবিখার কাজ করার নিয়ম নেই। শ্রমিক দিয়েই কাজ করার নিয়ম। তবে কাজ কীভাবে হয়েছে আমার জানা নেই। প্রকল্পের কাজ ভেকু দিয়ে হয়েছে না শ্রমিক দিয়ে হয়েছে তা আমি খোঁজখবর নিব।’
নদী বন্দর / পিকে