যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মিয়ামিতে ধসে পড়া ভবনের সাউথ ব্লকের অংশটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। ফ্লোরিডায় গ্রীষ্মকালীন ঝড় আঘাত হানতে পারে এমন খবরের পর নিরাপত্তার আশঙ্কায় ভবনের বাকি অংশ ধ্বংস করা হয়। খবর বিবিসির।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার ওই ভবনের দক্ষিণের অবশিষ্ট অংশটি ভেঙে ফেলতে বিস্ফোরকের ব্যবহার করা হয়। ১২তলা ওই ভবনের একটি অংশ গত ২৪ জুন ধসে পড়ে। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।এই ঘটনায় এখনও ১২১ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
নিরাপদে যাতে আবারও অনুসন্ধান কাজ করা যায় সেজন্য ভবনের অবশিষ্ট অংশটুকু ভেঙে ফেলা হয়, যেখানে কোনো মরদেহ ছিল না।
মঙ্গলবার গ্রীষ্মকালীন ঝড় এলসা ফ্লোরিডায় আঘাত হানতে পারে। এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এরপরই ওই ভবনের বাকি অংশটুকু ধ্বংস করার উদ্যোগ নেয়া হয়।
রোববার মেয়র চার্লস বারকেট বলেন, প্রবল বাতাস ধ্বংসাবশেষে কাজ করা অনুসন্ধানকারীদের জীবন বিপন্ন করতে পারে। এজন্য ভবনের অতিরিক্ত অংশটুকু ভাঙা জরুরি। বিশেষজ্ঞরা কীভাবে সেই অংশটি ধ্বংস করবেন তা তারা ভালোভাবে জানেন বলে জানান তিনি।
ধ্বংসযজ্ঞের আগে মিয়ামি-ডেড কাউন্টির মেয়র ড্যানিয়েল লেভিন ক্যাভা আশপাশের বাসিন্দাদের ঘরের ভেতরে থাকতে এবং এটা শেষ হওয়ার কমপক্ষে দুই ঘণ্টা পর্যন্ত জানালা বন্ধ রাখার পরামর্শ দেন।
ড্যানিয়েল লেভিন ক্যাভা ধসে নিখোঁজ পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান এবং বলেন, অনুসন্ধানী দল ভবনটি ধ্বংসের আগে তার মধ্যে কোনো পোষা প্রাণি আছে কি-না সেটা পরীক্ষা করতে থার্মাল ইমেজিং ক্যামেরা দিয়ে ড্রোন ব্যবহার করে নিশ্চিত হয়, ওই ভবনে কোনো প্রাণি নেই। ভবনটি ভেঙে ফেলার পর অনুসন্ধানী দলগুলো আবারও তাদের অনুসন্ধান প্রক্রিয়া শুরু করেছেন বলে জানান তিনি
স্থানীয় সময় ২৪ জুন (বৃহস্পতিবার) সকালে ভবনটি যখন ধসে পড়ে তখন সেখানকার অধিকাংশ বাসিন্দাই ঘুমিয়ে ছিলেন।
গবেষকরা বলছেন, ১৯৮১ সালে নির্মিত ভবনটি ১৯৯০ সাল থেকেই দেবে যাচ্ছিল। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে ফ্লোরিডা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক শিমন উইডোইনস্কি ২০২০ সালে সর্বশেষ একটি গবেষণায় এ ব্যাপারে সতর্ক করেছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, ১৯৯০ সাল থেকে প্রতি বছর ভবনটি ২ মিলিমিটার করে দেবে যাচ্ছিল। তখন থেকেই এটি যে কোনো সময় ধসে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল।
পুলিশ বলেছে, ওই ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল ১৯৮০ সালে। এতে ১৩০টি ইউনিট ছিল। এই ধসের কারণে অর্ধেক ইউনিট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এছাড়া শনিবার একজন ইঞ্জিনিয়ারের রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। সেখানে দেখা যায়, ২০১৮ সালে তিনি এই ভবনের মূল নকশায় বড় ধরনের ত্রুটির কথা জানিয়েছেন।
নদী বন্দর / সিএফ