সিরিয়ায় সশস্ত্র সরকারি বাহিনীর হামলায় পাঁচ শিশুসহ ১১ জন নিহত হয়েছে। শনিবার প্রথম হামলাটি হয় দেশটির ইদলিব প্রদেশের ইহসিম শহরে। যাতে দুই শিশুসহ পাঁচজন নিহত হয়েছে। ব্রিটিশ মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের বরাত দিয়ে আরব নিউজ জানায়, নিহতরা তাদের নববিবাহিত এক আত্মীয়কে শুভেচ্ছা জানাতে ইদলিবে যাচ্ছিল। এসময় তাদের লক্ষ্য করে কামান গোলা নিক্ষেপ করে আসাদ বাহিনী। এতে হতাহতের ঘটনাটি ঘটে।
ইদলিব প্রদেশকে আসাদবিরোধীদের ঘাঁটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের এক সদস্য গণমাধ্যমকে জানান, সদ্য বিয়ে করা এক আত্মীয়কে শুভেচ্ছা জানাতে তারা দক্ষিণ ইদলিবে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ কোন কারণ ছাড়াই তাদের ওপর কামানের গোলা নিক্ষেপ করে সরকারি বাহিনী। ঘটনাস্থলেই দুই শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়।
একই দিনে দক্ষিণ ইদলিবের সারজা গ্রামে সরকারি বাহিনীর অন্য একটি রকেট হামলায় তিন শিশুসহ ৬ জন নিহত হয়েছে। এ নিয়ে শুধু শনিবার সরকারি এবং সরকার সমর্থিত বাহিনীর হামলায় ইদলিবে ১১ জনের প্রাণহানি হলো।
সরকারি বাহিনীর এসব হামলার দিন টানা চতুর্থবারের মতো যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন বাশার আল-আসাদ। শনিবার দেশটির সংসদে নতুন মেয়াদে শপথ গ্রহণ করেন তিনি। ফলে আগামী আরও সাত বছর সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকবেন ৫৫ বছর বয়সী এই প্রেসিডেন্ট।
লেবাননের আল-মায়াদিন টেলিভিশন জানায়, শনিবার বাশার আল-আসাদ সংসদে উপস্থিত হলে সবাই তাকে স্বাগত জানান। এরপর সংবিধান মেনে সবার সামনে নতুন মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন তিনি। শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিরিয়ার রাজনীতিবিদ, ক্রীড়াবিদ, সাংবাদিক, শিল্পীসহ প্রায় ৬শ’ মানুষ।
শপথ শেষে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ বলেন, যেসব জাতি স্বাধীনতা ও মুক্তির পথ বেছে নিয়েছে তারা কখনো নিজেদের অধিকার রক্ষার সংগ্রামে ক্লান্ত হয় না। তিনি আরও বলেন, অনেকেই সিরিয়াকে ভেঙে টুকরো টুকরো করতে চেয়েছিল। কিন্তু জনগণ ঐক্যবন্ধ থেকে শত্রুদের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করেছে।
৫৫ বছর বয়সী বাশার আল-আসাদ ২০০০ সাল থেকে দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তার বাবা হাফিজ আল-আসাদ প্রায় পঁচিশ বছর সিরিয়া শাসন করেছেন। বাবার পর দায়িত্ব নেন বাশার আল-আসাদ।
প্রায় দশ বছর ধরে গৃহযুদ্ধে দিশহারা সিরিয়া। ২০১১ সালে বাশার আল-আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে একটি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচীতে সরকারি বাহিনীর রক্তক্ষয়ী পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে এ গৃহযুদ্ধটি শুরু হয়েছিল।
চলমান এ যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছে প্রায় তিন লাখ ৮৮ হাজার মানুষ। বাস্তুচ্যুত হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে দেশটির প্রায় অর্ধেক জনগণ। এর মধ্যে বিদেশে শরণার্থী শিবিরে আছে প্রায় ৬০ লাখ।
সূত্র: আরব নিউজ
নদী বন্দর / পিকে